
যা চলছে এনবিআরে
- ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৯
-10953.jpg)
বহিষ্কার, বাধ্যতামূলক অবসর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তের আতঙ্কের মধ্যে গণক্ষমা চেয়েছেন আন্দোলনরত এনবিআর কর্মকর্তারা। যদিও অনেক সিদ্ধান্ত এনবিআর চেয়ারম্যানের এখতিয়ারভুক্ত নয়, তবুও মঙ্গলবার তারা এনবিআরে গিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তাদের আহ্বান, সরকার যেন কোনো মধ্যম পথ নয়, বরং সবাইকে পূর্ণাঙ্গ গণক্ষমা প্রদান করে।
বিশ্লেষকদের মতে, টেকসই সমাধানের জন্য আস্থার পরিবেশ তৈরি এবং মৌলিক সংস্কারে গুরুত্ব দেওয়া এখন সময়ের দাবি।
উল্লেখ্য, এনবিআরের যৌক্তিক সংস্কার এবং বর্তমান চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মে মাসে প্রথম দফা এবং জুনের শেষ সপ্তাহে দ্বিতীয় দফায় আন্দোলনে নামেন। ২৮ ও ২৯ জুন সারাদেশের কাস্টমস অফিস ও বন্দর বন্ধ রেখে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি পালন করেন তারা। পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় ২৯ জুন আন্দোলন স্থগিত করে এনবিআর ঐক্য পরিষদ।
প্রত্যাহারের এক সপ্তাহ না যেতেই পাঁচ সিনিয়র কর্মকর্তাকে বরখাস্ত ও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। দুদক এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে আরও জ্যেষ্ঠ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো কাঠামোতে। এমন পরিস্থিতিতে গণক্ষমা চাওয়া শুরু করেছেন আন্দোলনকারীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআর সংস্কার ঐক্যপরিষদের এক সদস্য গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুইজন তিনজনকে যখন অব্যাহতি দেওয়া হবে তখন বাকিরা আতঙ্কের মধ্যে থাকবে। হয় সবাইকে শাস্তি দিতে হবে, না হয় সবাইকে ক্ষমা করে দিতে হবে।’
বদলি, প্রত্যাহারসহ নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মধ্যেও ইতিমধ্যে ৪৬ জন উপ কর কমিশনারকে যুগ্ম কর কমিশনার হিসেবে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। যদিও সরকারের ইতিবাচক মনোভাবের কথা সোমবার জানিয়ে দিয়েছেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
এনবিআরের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেন, ‘তাদের যে কাজকর্ম সেগুলো যদি তারা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে আমি মনে করি না তাদের ভয়ের কোনো কারণ আছে। এখানে যাতে ব্যবসায়ীরা কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হোন এবং কোনো ধরনের কোনো সমস্যায় না পড়েন সে বিষয়ে আমরা বলেছি।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মূহুর্তে কর্মীদের মধ্য বিশ্বাস ও আস্থা তৈরী করে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।
কর বিশ্লেষক স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, ‘ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং নীতি বিভাগের মধ্যে যেন সমন্বয় বা যোগ সূত্র তৈরি হয়। আমরা যদি মৌলিক বিষয়টা সংস্কার করতে পারি, যেহেতু এটাই ছিল তাদের আন্দোলনের মূল বিষয় বস্তু। যদি এটার প্রতিফলন দেখতে পায় তাহলে বুঝব, যে বিষয় নিয়ে আন্দোলন করা হয়েছে সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।’
দেশের স্বার্থে এবং কাঙ্খিত রাজস্ব আদায়ে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান বিশ্লেষকদের।