
বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে যা বললেন চীনা বিনিয়োগকারীরা
- ১০ জুলাই ২০২৫, ১৫:১৭

বাংলাদেশের কর সুবিধা ও বিভিন্ন প্রণোদনার সুযোগ কাজে লাগাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগে (জয়েন্ট ভেঞ্চার) আগ্রহ দেখিয়েছেন চীনা বিনিয়োগকারীরা।
তবে তারা মনে করেন, এসব উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়নে বন্দর, জ্বালানি ও পরিবহন খাতসহ সামগ্রিক অবকাঠামোর উন্নয়ন জরুরি। একইসঙ্গে, বাণিজ্য নীতিমালা আরও সহজ করা এবং কারখানাগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।
গতকাল (৯ জুলাই) ঢাকার গুলশানে চীনা এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘চীন–বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন কো-অপারেশন’ শীর্ষক সেমিনারে যৌথ বিনিয়োগ ও সহযোগিতা বিষয়ক বিভিন্ন দিক তুলে ধরে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনটিতে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, সড়ক ও সেতু, বন্দর, বস্ত্র ও পোশাক, বাণিজ্য ও সেবা, রেল, বেসামরিক বিমান চলাচল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, এবং পানি ও পরিবেশ—এই খাতগুলোর বর্তমান বাজার প্রবণতা, বিনিয়োগের সুযোগ-চ্যালেঞ্জ এবং সম্ভাবনার বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও চীনের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।
চীনা এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫০টিরও বেশি চীনা কারখানা পরিচালিত হচ্ছে, যেখানে দুই লাখেরও বেশি মানুষ কর্মরত।
প্রতিবেদনের কৌশলগত সুপারিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশি শীর্ষস্থানীয় কারখানাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলে দেশের কর সুবিধা কাজে লাগাতে আগ্রহী চীনা বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি, তারা 'বাংলাদেশ-চীন গ্রিন ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্ল্যাটফর্ম' স্থাপনেও আগ্রহ দেখিয়েছে।
তবে এসব উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য বন্দর আধুনিকায়ন, উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা ও জ্বালানি অবকাঠামো গড়ে তোলা, উপযোগী বাণিজ্যনীতি প্রণয়ন এবং শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
আলোচনায় চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, "গত আগস্টের পর থেকে আগের একই সময়ের তুলনায় বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বেড়েছে।" তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশে চীন তার বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আরও বাড়াবে।"
চীনা রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, "দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সহযোগিতা এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।"
বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, "সম্ভবত চীনই বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী হতে যাচ্ছে।"
তিনি আরও জানান, টেক্সটাইল, তৈরি পোশাক এবং ডিজিটাল অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।