
আলোচিত সেই এনসিপি নেত্রীর পদত্যাগ
- ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৫:১৩

হঠাৎ করেই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আলোচিত নেত্রী নীলা ইস্রাফিল পদত্যাগ করেছেন। আজ সোমবার (২৮ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।
পোস্টে নীলা ইস্রাফিল লিখেছেন, আমি নৈতিকতা বেছে নিচ্ছি, দুর্বৃত্ত রাজনীতি নয়।
তিনি আরও লিখেছেন, এনসিপি (NCP) একটি রাজনৈতিক দল, যেখানে অপরাধীর বিচার হয় না, যেখানে একজন নারীকে হেনস্তার পরেও অপরাধীর পক্ষে নীরবতা পালন করা হয়, সেই জায়গায় আমি এক মুহূর্তও থাকতে পারি না।
আলোচিত এই নেত্রী আরও লিখেছেন, একজন নারীকে অপমান, নিপীড়ন ও সামাজিকভাবে ধ্বংসের চেষ্টা যে ব্যক্তিটি করেছে, তার বিরুদ্ধে যখন কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় না, বরং সে দলীয় ছত্রচ্ছায়ায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায়, সেই দল আর কোনো মতাদর্শ বা ন্যায়বিচারের প্রতিনিধিত্ব করে না।
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে তিনি লিখেছেন, আমি আজ থেকে, এখন থেকেই এনসিপির (NCP) সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করছি। এ দলকে আমি reject করলাম।
সবশেষে নীলা লিখেছেন, আমি ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে। আপোষহীন প্রতিবাদই আমার অস্ত্র। সত্য ও মর্যাদার পথে আমি একা চললেও পিছপা হব না।
এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম আহ্বায়ক সরোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন নীলা ইস্রাফিল।
গত মাসের ২৬ জুন তুষারের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দেন এই নেত্রী।
অভিযোগপত্রে নীলা ইস্রাফিল বলেন, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে তার প্রাক্তন স্বামীর দ্বারা সহিংসতার শিকার হয়ে শারীরিক, মানসিক এবং সাংগঠনিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় তাকে মানবিক সহায়তা দেন সরোয়ার তুষার। পরে রাজনৈতিক যোগাযোগের এই সম্পর্ককে সরোয়ার তুষার ব্যক্তিগত ও অনৈতিক রূপ, যৌন হয়রানি করতে উদ্যত হন।
‘তিনি (সরোয়ার তুষার) প্রায়ই রাতের বেলা কল করে বলেন, ‘‘রাজনীতি নিয়ে কথা ভালো লাগে না, তোমার কণ্ঠে ভালো লাগে প্রতিবাদের স্লোগান’’, ‘‘তোমার ঠোঁট সুন্দর’’, ‘‘একটা সুন্দর ছবি পাঠাও’’- এ ধরনের মন্তব্য বারবার আমাকে অস্বস্তি ও অপমানের মধ্যে ফেলেছে।’
নীলা ইস্রাফিল আরও অভিযোগ করেন, ‘আমি বারবার অনুরোধ করেছি পেশাদারির সীমা রক্ষা করতে। এরপরও তিনি (সরোয়ার তুষার) বারবার ব্যক্তিগত আলাপের দিকে আলোকপাত করেন। ছবি চাইতেন এবং ভিডিও কলে কথা বলতে চাইতেন।’
এনসিপির এই নেত্রী বলেন, ‘তুষার বলেন- ‘‘তোমার বিষয়ে ডিবি অফিসার আমাকে প্রশ্ন করলে আমি বলেছি, তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড।’’ একজন রাজনৈতিক নেতার কাছ থেকে এ ধরনের ভ্রান্ত তথ্য প্রদান চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং আমার সামাজিক মর্যাদাকে হেয় করার শামিল।’
এ বিষয়ে একটি নিরপেক্ষ, নারীবান্ধব এবং স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে সারোয়ার তুষারের বিরুদ্ধে যথাযথ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান নীলা। একই সঙ্গে নারী কর্মীদের জন্য স্বচ্ছ, নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর অভ্যন্তরীণ অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা চালুর দাবি জানান তিনি।