
ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কী বললেন উপদেষ্টা আসিফ?
- ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০৭
-10914.jpg)
আজ মঙ্গলবার (০৯ সেপ্টেম্বর) ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আশাবাদ প্রকাশ করেছেন। তিনি ডাকসু নির্বাচনের শান্তিপূর্ণ ও সফল আয়োজন এবং ত্যাগী, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার প্রত্যাশা জানিয়েছেন।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেন, সফলভাবে সম্পন্ন হোক ডাকসু নির্বাচন। ত্যাগী, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য নেতৃত্ব পাক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এরইমধ্যে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে একযোগে অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন। ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ভোটার ১৮ হাজার ৯৫৯ জন এবং ১৩টি ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন।
ডাকসু নির্বাচনে এবার মোট ২৮টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। হল সংসদের প্রতিটি হলে ১৩টি করে মোট ১৮টি হলে পদসংখ্যা ২৩৪টি, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৩৫ জন। ভোটারদের প্রতিটি কেন্দ্রে গিয়ে আলাদাভাবে ৪১টি ভোট দিতে হবে।
নির্বাচনে অন্তত ১০টি পূর্ণাঙ্গ ও আংশিক প্যানেল অংশ নিচ্ছে। পাশাপাশি অংশ নিচ্ছেন বহু স্বতন্ত্র প্রার্থী।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাগছাস, ছাত্র অধিকার পরিষদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, সাতটি বাম সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’, তিনটি বাম সংগঠনের ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’, এবং উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’সহ বৈচিত্র্যময় রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক প্ল্যাটফর্ম এবারের নির্বাচনে লড়াইয়ে আছে।
ভিপি (সভাপতি) পদের জন্য বিএনপি-ঘনিষ্ঠ ছাত্রদলের পক্ষ থেকে লড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান। জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে আছেন কবি জসীম উদ্দীন হল শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শেখ তানভীর বারী হামিম এবং এজিএস (সহ-সম্পাদক) পদের প্রার্থী বিজয় একাত্তর হল ছাত্রদলের আহ্বায়ক তানভীর আল হাদী মায়েদ।
ছাত্রশিবির থেকে ভিপি প্রার্থী করা হয়েছে তাদের বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক আবু সাদিক কায়েমকে, যিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি। জিএস পদে প্রার্থী এস এম ফরহাদ এবং এজিএস পদে মুহাঃ মহিউদ্দীন খান। তারা দুজনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) প্যানেল থেকে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুল কাদের। এজিএস প্রার্থী আবু বাকের মজমুদার ও আশরেফা খাতুন। আশরেফা খাতুন জুলাই আন্দোলনের সময় সক্রিয় ছিলেন এবং এখন বাগছাসের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সাতটি বাম সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল থেকে ভিপি পদে শেখ তাসনীম আফরোজ ইমি, জিএস পদে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু এবং এজিএস পদে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা। জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং এজিএস পদে গুরুভার আড্ডার সংগঠক জাহেদ আহমদ।
তিনটি ভিন্ন সংগঠন—ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের একাংশ এবং বিসিএল-জাসদ (বাংলাদেশ ছাত্রলীগ–জাসদ) মিলে ‘অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪’ প্যানেল গঠন করেছে। এই প্যানেলের ভিপি প্রার্থী নাইম হাসান হৃদয়, জিএস প্রার্থী এনামুল হাসান অনয় এবং এজিএস প্রার্থী অদিতি ইসলাম।
ছাত্র অধিকার পরিষদ থেকে ভিপি পদে লড়ছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, জিএস পদে সাবিনা ইয়াসমিন এবং এজিএস পদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম।
ভিন্নধর্মী ইশতেহার ও প্রচারণা কৌশলের মাধ্যমে আলোচনায় এসেছেন স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী শামীম হোসেন। তিনি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক।