
জাতিসংঘে বাংলাদেশের নজিরবিহীন ঘটনা
- ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯
-11857.jpg)
আগামী ২২ তারিখ জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তার সফরসঙ্গী হচ্ছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির চার শীর্ষস্থানীয় নেতা।
সরকারপ্রধানের সঙ্গে প্রধান দলগুলোর নেতাদের নিয়ে জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশগ্রহণের এমন উদ্যোগ বাংলাদেশে এই প্রথম, যা নজিরবিহীন বলেই বিবেচিত হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বুধবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার নিউ ইয়র্ক সফরের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
তিনি জানান, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর রাতে একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন অধ্যাপক ইউনূস, যিনি ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পৌঁছাবেন। সফর শেষে তিনি ২ অক্টোবর দেশে ফিরবেন বলে জানানো হয়।
এই সফরে ইউনূসের সঙ্গে থাকবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির।
এ বছর ৮০ বছরে পা রাখছে জাতিসংঘ। এবারের সাধারণ অধিবেশনের প্রতিপাদ্য: ‘Better Together: Eighty Years and More for Peace, Development and Human Rights’ (একসঙ্গে আরও ভালো: শান্তি, উন্নয়ন ও মানবাধিকারের ৮০ বছর এবং তার পরেও)।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এবারের অধিবেশন বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, কারণ ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির সভাপতিত্বে রোহিঙ্গা মুসলিম ও মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর পরিস্থিতি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এমন একটি উচ্চপর্যায়ের সভা এবারই প্রথম।
এ ছাড়া, এ বছর বিশ্ব যুব কর্মসূচির ৩০ বছর এবং নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক ঐতিহাসিক রেজ্যুলেশনের ২৫ বছর পূর্তি হচ্ছে।
বিশ্ব যুব কর্মসূচির ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ সেপ্টেম্বর একটি উচ্চপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সভায় অংশ নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। পরদিন ২৬ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ আলোচনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখবেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, তিনি তার বক্তব্যে জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রেক্ষিতে বিগত এক বছরে বাংলাদেশে সম্পন্ন সংস্কার এবং আসন্ন নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলার দৃঢ় প্রত্যয় তুলে ধরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।
পাশাপাশি, তিনি আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের বলিষ্ঠ ভূমিকা, বিশ্বব্যাপী চলমান সংঘাত, রোহিঙ্গা সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন ও এর প্রভাব, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর চ্যালেঞ্জ, সম্পদ পাচার রোধ, নিরাপদ অভিবাসন, অভিবাসীদের মৌলিক পরিষেবার নিশ্চয়তা, জেনারেটিভ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে প্রযুক্তির টেকসই স্থানান্তর এবং সর্বোপরি ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাবেন।
অধিবেশনের ফাঁকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়াও, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গেও একটি বিশেষ মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন অধ্যাপক ইউনূস।