সাবেক মন্ত্রীর অর্থপাচারকারী এজেন্ট গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আলোচিত সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের বাংলাদেশ থেকে দুবাই এবং দুবাই হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অর্থপাচারের ঘটনায় এজেন্ট হিসেবে কাজ করা আরামিট গ্রুপের এজিএম উৎপল পাল এবং দেশের সম্পদ দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল আজিজকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) তাদের চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালতে উপস্থাপন করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে বলে দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া মো. আব্দুল আজিজ ‘ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং দুদকের এজাহারভুক্ত আসামি। অন্যদিকে, আরামিট পিএলসির এজিএম উৎপল পালকে নতুন করে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে।

দুদক সূত্রে আরও জানা যায়, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে সম্পদ অর্জন ও দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মচারী ছিলেন উৎপল পাল। তিনি জাবেদের দেশ থেকে দুবাই এবং সেখান থেকে যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য দেশে অর্থপাচার প্রক্রিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে কাজ করেছেন। দুদক উৎপল পালকে এ ঘটনায় ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে বিবেচনা করছে। যদিও তিনি আরামিট পিএলসির কর্মচারী, তথাপি ব্যক্তিগতভাবে সাইফুজ্জামানের জন্য বিদেশে সম্পদ তৈরি ও তদারকির কাজ করতেন। তার কাছ থেকে জব্দ করা দুটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইল ফোনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে, যা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, আব্দুল আজিজ দেশের ভেতরে সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় ও রক্ষণাবেক্ষণকারীর ভূমিকা পালন করতেন।

এদিকে, অর্ধডজন মামলার আসামি সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়োনা জারির আবেদন করেছে দুদক, যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। প্রায় ১২৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ও ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামানসহ অর্ধশতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত চলছে।

তথ্য অনুসারে, সাবেক মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর নামে যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি স্থাবর সম্পদ (বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট ও জমি) ক্রোক ও ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের আদালত। এছাড়া গত ৫ মার্চ দেওয়া এক আদেশে, তাদের নামে থাকা ৩৯টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়, যাতে মোট ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকা জমা রয়েছে।

অপর এক আদেশে, দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাইফুজ্জামানের ১০২ কোটি টাকার শেয়ার এবং ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর, তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছিলেন আদালত।