৩৪ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা
- ০২ অক্টোবর ২০২৫, ১১:২৫
ইরানের সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ-সরবরাহে মদদদানের অভিযোগে ২১ প্রতিষ্ঠান ও ১৭ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (০১ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফরেন অ্যাসেটস কন্ট্রোল অফিস (OFAC) এই ঘোষণা দেয়।
মার্কিন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইরানের Aerospace Industries Organization (AIO) এবং Shahid Bakeri Industrial Group (SBIG)-এর সঙ্গে জড়িত একটি বিস্তৃত নেটওয়ার্ক গোপনে দেশীয়ভাবে সামরিক প্রযুক্তি সংগ্রহ করে চলছে। উল্লেখ্য, এই দুই প্রতিষ্ঠান ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এছাড়া প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ইরান-হংকং-চীন-ভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক সরবরাহ চেইন মার্কিন উৎপাদিত ইলেকট্রনিক পণ্য শিরাজ ইলেকট্রনিকস ইন্ডাস্ট্রিজ নামের প্রতিষ্ঠানের কাছে পৌঁছে দিয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠান রাডার ও মিসাইল গাইডেন্স সিস্টেম তৈরি করে বলে দাবি করা হয়েছে।
আরও একটি নেটওয়ার্ক, যার শাখা ছড়িয়ে রয়েছে ইরান, জার্মানি, তুরস্ক, পর্তুগাল এবং উরুগুয়ে জুড়ে, তারা ইরানের Helicopter Support and Renewal Company-র জন্য যন্ত্রাংশ জোগাড় করেছে। এই কোম্পানি ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) ব্যবহৃত হেলিকপ্টার সার্ভিস করে।
এই নিষেধাজ্ঞাগুলো জাতিসংঘের স্ন্যাপব্যাক ব্যবস্থার আওতায় নেওয়া হয়েছে।সম্প্রতি, এই ব্যবস্থা আবার কার্যকর করে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। এটি কার্যকর হওয়ার পর এই প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্র এত বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করল।
OFAC জানিয়েছে:যুক্তরাষ্ট্রের এখতিয়ারাধীন এলাকায় উল্লিখিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সব সম্পদ জব্দ করা হবে।মার্কিন নাগরিকরা এই তালিকাভুক্তদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবে না।বিদেশি ব্যাংকগুলো যদি তাদের সঙ্গে বড় ধরনের লেনদেন করে, তাহলে তারা দ্বিতীয় ধাপের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে।
ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকদের ধারণা, এই নিষেধাজ্ঞা ইরানের প্রতিরক্ষা খাতকে চাপের মধ্যে ফেলবে, এবং চীন, তুরস্ক, জার্মানি প্রভৃতি দেশগুলোর সঙ্গে ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক উত্তেজনা বাড়াতে পারে।
‘Snapback’ নিষেধাজ্ঞা হলো একটি ব্যবস্থাপনা, যার মাধ্যমে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো পূর্বে স্থগিত রাখা নিষেধাজ্ঞা আবার কার্যকর করতে পারে, যদি কোনো দেশ পূর্ব শর্ত ভঙ্গ করে।
২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক চুক্তি (JCPOA)-এর আওতায় এসব নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ সালে চুক্তি থেকে একতরফাভাবে সরে এসে আবার 'স্ন্যাপব্যাক' ব্যবস্থার পথ ধরে। সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের ফলে সেই ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করা হলো।