
রাফাল বিধ্বংসী সেই বিমান কিনছে বাংলাদেশ
- ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:১০

ভারতের রাফাল ধ্বংস করা ২০টি জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর জন্য চীনের তৈরি এই মাল্টিরোল কমব্যাট এয়ারক্রাফটগুলো কেনা হবে সরাসরি চীনের সঙ্গে সরকার থেকে সরকার পর্যায়ে (জি-টু-জি) চুক্তির মাধ্যমে। এই প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ২২০ কোটি মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৭ হাজার ৬০ কোটি টাকা। চুক্তি অনুযায়ী এই ব্যয় ১০ বছরের মধ্যে পরিশোধ করা হবে।
প্রতিটি জে-১০সি যুদ্ধবিমানের মূল্য ৬ কোটি ডলার করে ধরা হয়েছে, যার মোট খরচ দাঁড়ায় ১২০ কোটি ডলার। বাকি ১০০ কোটি ডলার ব্যয় হবে বৈদেশিক ও স্থানীয় প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, পরিবহন, বিমা, ভ্যাট, এজেন্সি কমিশন এবং অবকাঠামো নির্মাণসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খাতে।
চলতি বছরের মার্চে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীন সফরে গেলে এই যুদ্ধবিমান ক্রয়ের বিষয়টি আলোচনায় আসে। পরবর্তীতে, যুদ্ধবিমান কেনা চূড়ান্ত করতে বিমানবাহিনী প্রধানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি খসড়া চুক্তিপত্র পর্যালোচনা ও দরপত্র চূড়ান্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ, খুচরা যন্ত্রাংশ ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়গুলোর সমন্বয় করবে।
জে-১০সি হলো ৪.৫ প্রজন্মের মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান, যা বর্তমানে চীনের বিমানবাহিনীর অন্যতম আধুনিক বিমান হিসেবে পরিচিত। এটি উন্নত এভিয়নিক্স, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম এবং দীর্ঘ পাল্লার ফ্লাইট পরিচালনার সক্ষমতা রাখে। চীনের বাইই অ্যারোবেটিক টিমও এই মডেলটি ব্যবহার করছে। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে এই বিমান ব্যবহার করে রাফাল যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছিল বলে দাবি করে পাকিস্তান।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মনিরুজ্জামান বলেন, “বাংলাদেশের যুদ্ধবিমান সংগ্রহের দীর্ঘদিনের চাহিদা রয়েছে। তবে ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে এই ধরনের চুক্তি করতে হবে। বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার চলমান কূটনৈতিক টানাপড়েন পরিস্থিতিকে জটিল করতে পারে।”
বর্তমানে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বহরে রয়েছে ২১২টি এয়ারক্রাফট, যার মধ্যে ৪৪টি ফাইটার জেট। এর মধ্যে ৩৬টি চীনা নির্মিত এফ–৭, ৮টি রাশিয়ার মিগ–২৯বি এবং ইয়াক–১৩০ রয়েছে। জে-১০সি যুক্ত হলে তা বিমান বাহিনীর আধুনিকীকরণে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।