আর্থিক অবস্থা নিয়ে সুখবর

অর্থনীতি

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়ে ১২.৫ শতাংশ থেকে নেমে ৮.৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। 

বুধবার (৮ অক্টোবর) এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি বলেন, আমরা এখনো ব্যাংকিং খাতের সার্বিক অবস্থা পুরোপুরি পুনরুদ্ধার করতে পারিনি। তবে চলমান সংস্কার কার্যক্রমে ধীরে ধীরে অগ্রগতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে কিছু ইতিবাচক ফলাফল দৃশ্যমান হয়েছে।

গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে পাঁচ মাসের আমদানির সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রেখেছে। মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে ১২.৫ শতাংশ থেকে ৮.৩ শতাংশে নেমে এসেছে। 

তিনি আরও বলেন, গত এক-দুই মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কমে প্রায় ৭ শতাংশে নামতে পারত, তবে চালের দামের সাময়িক বৃদ্ধির কারণে তা সম্ভব হয়নি।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের টেকসই উত্তরণের কৌশল বাস্তবায়ন ও পর্যবেক্ষণের জন্য গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভায় গভর্নর এসব কথা বলেন।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান।

গভর্নর আরও বলেন, চালের দাম আবারও কমতে শুরু করেছে এবং আশা করা যাচ্ছে সামনের দিনগুলোতে মূল্যস্ফীতি আরও হ্রাস পাবে।

খেলাপি ঋণ নিয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে। এটি মূলত পূর্ববর্তী শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে ব্যাপক দুর্নীতি ও ব্যাংক লুটের কারণে হয়েছে। যা ব্যাংক খাতের সার্বিক অবস্থাকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। 

গভর্নর বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও অনিয়মের কারণেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এখন খেলাপি ঋণ ২৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

আর্থিক খাত পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত করা হবে এবং ৯টি নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন (লিজিং কোম্পানি) ধীরে ধীরে বন্ধ করে দেওয়া হবে।

উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা কার্যক্রম উৎসাহিত করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৯০০ কোটি টাকার একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড গঠন করা হচ্ছে। যেখানে বাংলাদেশ ব্যাংক অতিরিক্ত ৬০০ কোটি টাকা দেবে বলে জানান গভর্নর।

তিনি আরও বলেন, রাজস্ব আয় বাড়ানো ও নগদ অর্থ ব্যবস্থাপনার খরচ কমানোর জন্য বাংলাদেশে একটি ক্যাশলেস লেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।