গণভোটের তারিখ নিয়ে যা জানা গেল
- ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫৪
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোটে রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য থাকলেও ভোটের সময় নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। কিছু দল জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করার পক্ষে, আবার অনেকে নির্বাচন শুরুর আগে গণভোট করার পক্ষে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বিভাজনের কারণে ভোটের দিন নির্ধারণের সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক ও প্রস্তুতির কারণে অন্তর্বর্তী সরকার প্রথমে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে আয়োজনের সম্ভাবনা যাচাই করছে। শুক্রবার (পরবর্তী দিনে) জুলাই সনদ স্বাক্ষরের পর সরকারি সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন কমিশনও একই দিনে ভোট আয়োজনকে সমর্থন করছে, কারণ এতে অতিরিক্ত খরচ ও পুনর্ব্যবস্থাপনার ঝামেলা কম হবে।
সরকারের সূত্র জানায়, জুলাই সনদ নিয়ে ঐক্যমত্য থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি চলছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোম সফর শেষে দেশে ফিরে কমিশনের সুপারিশ পেশ করবেন। এরপরই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের দিন চূড়ান্ত হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোও পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা চালাচ্ছে। বিএনপি সহ যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র দলগুলো প্রার্থীর তালিকা কমিশনের কাছে জমা দিচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করে তাদের যুক্তি শুনেছে। এনসিপি চাইছে ভোট নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হোক যাতে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।
নির্বাচন কমিশনাররা মনে করেন, একই দিনে দুই ভোট হলে খরচ সাশ্রয় হবে এবং প্রশাসনিক চাপও কমবে। নির্বাচনে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে, ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রে ৪ লক্ষাধিক ভোটকক্ষ ব্যবহৃত হবে, প্রবাসী ভোটারদের ভোট ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত। আলাদা দিনে ভোট হলে আরও খরচ এবং সময় লাগবে।
গণভোটের দিনক্ষণ এখনও নির্ধারণ হয়নি, কারণ দলগুলোতে বিভাজন রয়েছে। বিশেষজ্ঞ পরামর্শ ও দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে সরকার ভোটের দিন চূড়ান্ত করবে। একই দিনে ভোট হলে ভোটারদের বিভ্রান্তি এড়াতে প্রচার-প্রচারণা জোরদার করতে হবে।
ইতিহাসে, বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান ১৯৭২ সালে গণভোটের বিধান অন্তর্ভুক্ত করলেও, ২০১১ সালে তা বাতিল করা হয়েছিল। তবে আদালতের সিদ্ধান্তে পঞ্চদশ সংশোধনী সংক্রান্ত গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশে তিনটি গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে।