উত্তপ্ত ভারত

বিজেপি

অনুপ্রবেশ নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তপ্ত ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গন। এবার এ বিষয়ে বিজেপি নেতাকে একহাত নিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ‘অনুপ্রবেশকারী’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। অখিলেশ বলেন, ‘যারা এক্সোডাস বা গণপ্রস্থানের পরিসংখ্যান দিচ্ছে, তাদের মধ্যেও অনুপ্রবেশকারী আছে। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরাখণ্ডের লোক, আমরা চাই তাঁকে উত্তরাখণ্ডে পাঠানো হোক। তিনি শুধু ভৌগোলিক দিক থেকে নন, মতাদর্শগত দিক থেকেও অনুপ্রবেশকারী।’

বিজেপি মিথ্যা পরিসংখ্যান দিচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘ওদের দেওয়া তথ্য যদি কেউ বিশ্বাস করে, তবে তারাই হারিয়ে যাবে।’

অখিলেশ যাদব আরও বলেন, ‘তিনি (যোগী আদিত্যনাথ) বিজেপির সদস্য ছিলেন না, অন্য একটি দলের সদস্য ছিলেন। তাহলে কবে এই অনুপ্রবেশকারীদের সরানো হবে?’

গতকাল রোববার লখনৌয়ের লোহিয়া পার্কে সমাজতান্ত্রিক নেতা রাম মনোহর লোহিয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।

অখিলেশ বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, ‘বিজেপি তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে চায়, আর মুখ্যমন্ত্রী সাদা টেবিলে বসে কালো মিথ্যা বলেন... যে সাদা টেবিলে তিনি লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন। সত্য হলো, উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি হয়রানি, নির্যাতন ও এমন নানা গুরুতর অপরাধ ঘটছে। দুর্নীতির সব সীমা অতিক্রম করেছে, প্রশাসনের প্রতিটি দপ্তরেই দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে সরকার একসময় বলত কানপুরে ৪৫ মিনিটে পৌঁছে যাবে, সেই সরকারই এখন অপরাধীদের রক্ষা করছে।’

বিজেপির স্বদেশী ঘোষণাকে নিশানা করে তিনি বলেন, ‘বিজেপি নেতারা স্বদেশীর কথা বলেন, কিন্তু তাদের হৃদয় বিদেশী স্বার্থের সঙ্গে যুক্ত। যদি তারা সত্যিই স্বদেশীতে বিশ্বাস করে, তাহলে কেন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য চলছে? কৃষকদের লাঠি মারা হচ্ছে, সার পাচ্ছেন না, আর প্রতিটি জায়গায় অন্যায় হচ্ছে। নির্বাচনী তহবিলের জন্য সরকার ব্যবসায়ীদের বড় লাভ করতে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিজেপি সবচেয়ে বড় জাতিবাদী দল। অনেক জেলায় পিডিএ অফিসার নেই। শুধু নির্দিষ্ট কোনো জাতির মানুষই পোস্টিং পাচ্ছে। দলিতরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, এবং আমরা তাদের তথ্য সংকলন করব।’

হরিয়ানার একজন সিনিয়র আইজি-র‍্যাঙ্কের পুলিশ কর্মকর্তা ওয়াই. পুরাণ কুমারের আত্মহত্যার প্রসঙ্গে যাদব বলেন, ‘আজও ভোট জাতির ভিত্তিতে চাওয়া হচ্ছে। এজন্য একজন আইপিএস কর্মকর্তা তার জীবন হারালেন। সুপ্রিম কোর্টে জুতা ছোঁড়া হয়েছে, ধর্মীয় বক্তাদের অপমান করা হয়েছে, আর ভালমীকি সম্প্রদায়ের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সরকার শুধু রাজনৈতিক কাজে ব্যস্ত, জনগণের কষ্ট বোঝে না।’

এর আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক দল অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করছে।

গত শুক্রবার ‘দৈনিক জাগরণ’-এর সাবেক সম্পাদক-ইন-চিফ নরেন্দ্র মোহনের স্মরণসভায় ‘অনুপ্রবেশ, জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ও গণতন্ত্র’ বিষয়ক বক্তৃতায় অমিত শাহ বলেন, ‘গুজরাট ও রাজস্থানের সীমান্তে অনুপ্রবেশ হয় না কেন, সেটাই প্রশ্ন।’

এদিকে, অখিলেশ যাদবের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক পিটিআইকে বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে তিনি প্রতিক্রিয়া জানাবেন।