অভিযোগ নিয়ে যা বলল চাকসু নির্বাচন কমিশন

চাকসু

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ভোট চলাকালে ভোটারদের আঙুলে দেওয়া অমোচনীয় কালি মুছে যাওয়া ও স্বাক্ষরবিহীন ব্যালটে ভোট গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলসহ একাধিক প্যানেলের প্রার্থীরা এসব অভিযোগ করেছেন।

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দীন এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

আঙুলের অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনে জার্মান থেকে কালি আনা হয়। ব্যবহারের পর বাকিটা ধ্বংস করে দেওয়া হয়। আমরা সব ধরনের চেষ্টা করেছি, সেই কালি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। আমরা নিয়ম রক্ষার জন্য কালির ব্যবস্থা করেছি। আমাদের এখানে এই কালি ব্যবহার জরুরি না, আমাদের ভোটারের পরিচয় তো আইডি কার্ড, ভোটার নম্বর ও ভোটার তালিকায় থাকা ছবিসহ তথ্য। এর মাধ্যমে ভোটারদের পরিচয় ভেরিফাই করা হচ্ছে। যারাই ভোটকেন্দ্রে ঢুকবে, তার ছবিসহ তথ্য দেখে নিশ্চিত করা হচ্ছে যে তিনি আসল ভোটার। তাই একজনের ভোট অন্য কারও দেওয়ার সুযোগ নেই।’

ব্যালটে স্বাক্ষরবিহীন ভোটের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসার আমাকে জানিয়েছেন, ভোটের শুরুর দিকে একজন কর্মকর্তা অজানাবশত ১২টি ব্যালট স্বাক্ষর ছাড়াই দিয়েছেন। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি একটি রেজুলেশন করার এই মর্মে যে, এই বাক্সে ১২-১৩টি ব্যালট আছে যেগুলো স্বাক্ষর করা হয়নি। রেজুলেশনে দায়িত্বরত সবাই স্বাক্ষর করবে। পরবর্তীতে সেই বাক্স যখন খোলা হবে তখন আমরা জানবো সেখানে কয়টি স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট আছে। তাহলে আর কোন কনফিউশন থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথমবারের মতো ভোট দিতে ব্যবস্থা করতে পারাটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এখনো পর্যন্ত ভোট ভালোভাবে চলছে। আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। আমরা ভোট নির্বিঘ্ন করতে কাজ করছি।’

এর আগে ভোট দেওয়ার সময় ভোটারদের আঙুলে দেওয়া অমোচনীয় কালি মুছে যাওয়ার অভিযোগ করেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় এবং শিবিরের ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি। সকাল সাড়ে ১০টায় আইটি ভবন কেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষে তারা এই অভিযোগ করেন।

ছাত্রদল প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, ‘ভোটারদের আঙুলে দেওয়া কালি মুছে যাচ্ছে। ফলে তারা পুনরায় ভোট দিতে যাওয়ার একটা আশঙ্কা আছে। আমি নিজেও এখন ভোট দিয়ে এসেছি, কিন্তু আমার আঙুলের কালি মুছে গেছে। বিষয়টি আমরা লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশনকে জানাবো।’ 

অন্যদিকে শিবির প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছিল, এমন কালি ব্যবহার করা হবে যা কয়েক দিনেও মুছে ফেলা যাবে না। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, শিক্ষার্থীদের আঙুলের কালি কিছুক্ষণের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে। নির্বাচনের শুরুতেই এটি শঙ্কার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

এদিকে স্বতন্ত্র শিক্ষা সম্মিলনের সমাজসেবা ও পরিবেশ বিষয়ক পদপ্রার্থী হাসিবুর রহমান রনি অভিযোগ করেন, ‘আমার এজেন্ট ফোন দিয়েছে যে আইটি ভবনের ২১৪ নম্বর রুমে ১৫-২০টা ব্যালট পেপার স্বাক্ষর ছাড়াই বাক্সে ফেলা হয়েছে। স্বাক্ষর ছাড়া বাক্সে পেপার ফেলতে পারে না। এজেন্টরা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন পরবর্তীতে এসে এজেন্টদের সামনে খুলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’