সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা জরিমানা

জরিমানা

আইন লঙ্ঘন করে ছয়টি মিউচুয়াল ফান্ডের অর্থ দিয়ে তালিকাচ্যুত ও বন্ধ প্রতিষ্ঠান পদ্মা প্রিন্টার্সের শেয়ার অস্বাভাবিক দামে ক্রয়ের অভিযোগে সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

জরিমানাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন এলআর গ্লোবালের সিইও রিয়াজ ইসলাম, সাংবাদিক রেজানুর রহমান সোহাগসহ আরও কয়েকজন।

একই ঘটনায় অনিয়মে সম্পৃক্ততার অভিযোগে বিএসইসি সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এবং রিয়াজ ইসলামকে আজীবন শেয়ারবাজার কার্যক্রম থেকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।

এছাড়া, মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে রিয়াজ ইসলাম ও সিটি ব্যাংক ক্যাপিটালের সাবেক এমডি এরশাদ হোসেনের বিরুদ্ধে অধিকতর তদন্তের জন্য বিষয়টি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি, অডিটর শফিক বসাকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফিনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিল (এফআরসি)-কে চিঠি দিচ্ছে বিএসইসি।

অতিরিক্তভাবে, সংশ্লিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর ব্যবস্থাপনা থেকে এলআর গ্লোবালকে অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশও দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।

বিএসইসি জানিয়েছে, এলআর গ্লোবাল পরিচালিত ছয় মিউচ্যুয়াল ফান্ড থেকে কার্যত অচল পদ্মা প্রিন্টার্স নামের কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার কিনতে ২৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিল এলআর গ্লোবাল। যখন পদ্মা প্রিন্টার্সের শেয়ার কেনা হয়, তখন এর শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ২ দশমিক ৭৪ টাকা, পুঞ্জীভূত লোকসান ছিল ২ দশমিক ৩৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া ওটিসি মার্কেটে এ কোম্পানির শেয়ার যখন ১৩ টাকা ৬০ পয়সায় কেনাবেচা হচ্ছিল, তখন এ শেয়ার কেনা হয় ২৮৯ টাকা ৪৮ পয়সায়। এর পর প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে কোম্পানিটির মূলধন এক কোটি ৬০ লাখ থেকে ৫০ কোটি টাকায় বৃদ্ধি করা হয়। এই পুরো প্রক্রিয়ায় ইউনিটহোল্ডারদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করা হয়েছে এবং এলআর গ্লোবালের নেতৃত্বাধীন পরিচালনা পর্ষদ ইচ্ছাকৃতভাবে অনিয়ম করেছে।

এ ঘটনায় এলআর গ্লোবালের সিইও রিয়াজ ইসলামকে এক কোটি ১০ লাখ টাকা, সাংবাদিক রেজানুর রহমান সোহাগকে এক কোটি এক লাখ টাকা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শরীফ আহসানকে এক কোটি টাকা, মেদিনা আলীকে এক কোটি টাকা, মো. ওমর সোয়েব চৌধুরীকে এক কোটি টাকা, সৈয়দ কামরুল হুদাকে এক কোটি টাকা, ট্রাস্টি বিজিআইসিকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় রিয়াজ ইসলামকে ৩০ দিনের মধ্যে সুদসহ ৯০ কোটি টাকা ছয় মিউচুয়াল ফান্ডে ফেরত আনতে নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় রিয়াজ ইসলামকে আরও ৯৮ কোটি টাকা এবং তার বিদেশি পার্টনার জর্জ এম স্টককে এক কোটি টাকা জরিমানা দিতে হবে।