হঠাৎ কেন বন্ধ ঢাবি?

ঢাবি

সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও ধারাবাহিক আফটার শকের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) আগামী দুই সপ্তাহের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে। এ কারণে কারিগরি ও নিরাপত্তাজনিত কারণে শিক্ষার্থীদের আগামীকাল বিকেল ৫টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার (২২ নভেম্বর) ঢাবির জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের এক জরুরি সভা আজ উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সিন্ডিকেট সদস্যরা সংযুক্ত ছিলেন। এছাড়া, চিকিৎসা অনুষদের ডিন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী সভায় অংশ নেন।

সভায় সাম্প্রতিক ভূমিকম্প ও পরবর্তী ঝাঁকুনি (আফ্টার শক)- এর কারণে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক আঘাতের বিষয়টি বিবেচনা করা হয় এবং তাদের সার্বিক নিরাপত্তার দিক সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। সভায় বুয়েটের বিশেষজ্ঞ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের পরিচালক এবং প্রধান প্রকৌশলীর মতামত বিশ্লেষণ করা হয়। 

তাদের মতামত হল– ভূমিকম্প পরবর্তী আবাসিক হলগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সামগ্রিক ঝুঁকি মূল্যায়ন ও প্রয়োজনীয় সংস্কার দরকার। এই ঝুঁকি নিরূপণ ও সম্ভাব্য সংস্কারের স্বার্থে আবাসিক হলগুলো খালি করা প্রয়োজন। এ কারণে সভায় আগামী শনিবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা এবং আবাসিক হলগুলো খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

রোববার (২৩ নভেম্বর) বিকেল ৫টার মধ্যে আবাসিক হলগুলো খালি করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সভায় প্রাধ্যক্ষদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসগুলো যথারীতি খোলা থাকবে।

এর আগে ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম এক ফেসবুক পোস্টে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাদিক কায়েম বলেন, “পরপর দুইদিন ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কনসার্নগুলো আমরা মাননীয় ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার স্যারদের অবগত করি।”

তিনি বলেন, “এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি এসএমটি এবং সিন্ডিকেট মিটিং আহ্বান করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মিটিংয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব হলের প্রতিটি কক্ষে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ডাকসুর ভিপি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ভূমিকম্প পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে।”