টানা তৃতীয়বার লন্ডনের মেয়র সাদিক খান

টানা তৃতীয়বার লন্ডনের মেয়র সাদিক খান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনের মেয়র পদে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেলেন সাদিক খান (৫৩)। তিনি প্রথম নেতা, যিনি টানা তিনবার এই পদে জয়ী হলেন।

লেবার পার্টির প্রার্থী সাদিক খান কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী সোসান হলকে হারিয়েছেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে লেবার পার্টির ব্যাপক জয়ের মধ্যে প্রত্যাশিতভাবেই সাদিক খান পুনর্নির্বাচিত হলেন।

লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় ভোট গ্রহণ শেষ হলেও গণনা শুরু হয় গত শুক্রবার থেকে। স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, বর্তমান মেয়র সাদিক খান (১০ লাখ ৮৮ হাজার ২২৫) প্রতিদ্বন্দ্বী সোসান হলকে (৮ লাখ ১১ হাজার ৫১৮) হারিয়েছেন ২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে।

পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাদিক খানের এই জয়ের মধ্যে দিয়ে লেবার পার্টি আরও শক্ত অবস্থানে চলে গেল। লেবার পার্টির পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়, সাদিক খানের জয়ের ব্যাপারে দল আত্মবিশ্বাসী।

বিবিসির খবরে বলা হয়, এবার ১৪টি নির্বাচনী এলাকার মধ্যে ৯টিতেই জিতেছেন সাদিক খান। এর মধ্যে কনজারভেটিভদের দুটি এলাকায় জিতেছেন তিনি। এবার নির্বাচনে মোট ভোট পড়েছে ২৪ লাখ, যা মোট ভোটারের ৪২ দশমিক ৮ শতাংশ। ভোট পড়ার হার গতবারে চেয়ে কিছুটা কম।

এবারের লন্ডনের মেয়র নির্বাচন ঘিরে আগে থেকেই উত্তেজনা ছিল। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা শুরুর পরপরই কনজারভেটিভদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, সোসানই মেয়র পদে জিততে চলেছেন, তবে মেয়র সাদিক খান বলেছিলেন, লড়াইয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। জরিপে অবশ্য তিনি সোসানের চেয়ে ২৫ শতাংশ এগিয়ে ছিলেন।

সাদিক খানের জন্ম লন্ডনেই, ১৯৭০ সালের ৮ অক্টোবর। এর দুই বছর আগে ১৯৬৮ সালে তাঁর মা-বাবা পাকিস্তান থেকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসী হিসেবে পাড়ি জমান। বাবা আমানউল্লাহ ছিলেন বাসচালক। মা শেহরুন করতেন দরজির কাজ। সাত ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাদিক পঞ্চম।

সাদিক খানের পড়ালেখা ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডন থেকে। বিষয় ছিল আইন। পড়াশোনা শেষে মানবাধিকার-বিষয়ক আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কম বয়সেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন লেবার পার্টির রাজনীতিতে।

১৯৯৪ সালে লেবার পার্টির হয়ে লন্ডনের ওয়ান্ডসওর্থ বারার কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হন সাদিক খান। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৪ বছর। ২০০৬ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০০৫ সালে যুক্তরাজ্যের জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ লন্ডনের টুটিং আসন থেকে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

২০০৮ সালে গর্ডন ব্রাউন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন স্থানীয় সরকারের পার্লামেন্টারি আন্ডার সেক্রেটারি এবং পরবর্তীতে যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সাদিক খান। ২০১০ সালে লেবার পার্টি বিরোধী দলে গেলে তিনি ছায়া মন্ত্রিসভায় বিচার-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রী, লর্ড চ্যান্সেলর (ছায়া অর্থমন্ত্রী) ও লন্ডন-বিষয়ক ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর জন্য পার্লামেন্ট থেকে পদত্যাগ করেন সাদিক খান। সে বছরের ৯ মে কনজারভেটিভ পার্টির জেক গোল্ডস্মিথকে হারিয়ে প্রথমবার লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর ২০২১ সালে কনজারভেটিভ পার্টির সোন বেইলিকে পরাজিত করে মেয়র পদ ধরে রাখেন সাদিক।

এআর-০৫/০৫/২৪

Share your comment :