ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গরমে অতিষ্ঠ রোগীরা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গরমে অতিষ্ঠ রোগীরা

নিজস্ব প্রতিবেক:
তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশে। অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। রাস্তায় বের রোদের তাপে যেন গায়ের চামড়া খসে পড়বে। গরমের তীব্রতায় ছোট-বড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। পানির পিপাসা কোন ভাবেই যেন মিটছে না। এই পরিস্থিতিতে অতিষ্ঠ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের রোগীরা। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সিলিং ফ্যান চললেও গরমে যন্ত্রণা কমছে না।

ফ্যানের বাতাস মেঝে ও শয্যায় থাকা রোগী পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। এ পরিস্থিতিতে রোগীদের একমাত্র ভরসা নিজেদের কেনা টেবিল ফ্যান ও হাতপাখা। শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবন ও পুরাতন ভবনের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

রোগী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, গরমে টেকা যাচ্ছে না। ওয়ার্ডের ভেতরে মনে হয় চুলা জ্বলছে। শরীর তাপে পুড়ে যাচ্ছে। ওয়ার্ডের সিলিং ফ্যান শুধু ঘুরছেই। বাতাস শরীরে লাগছে না।

তারা জানান, সিলিং ফ্যানের বাতাস রোগী পর্যন্ত পৌঁছায় না। তাই তাদের সবার ভরসা বাইরে থেকে কিনে আনা টেবিল ফ্যান ও হাতপাখা। টেবিল ফ্যানের সংযোগ পেতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ঝিনাইদহ থেকে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন সড়ক দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী আলামিন। পুরাতন ভবনের সিঁড়ির পাশেই মেঝেতে তাকে চিকিৎসা নিতে দেখা যায়। তীব্র গরমে প্লাস্টিকের হাতপাখা দিয়ে টানা বাতাস করে যাচ্ছেন তার মা ও ভাই।

আলামিনের মা ডালিয়া বেগম বলেন, রাস্তায় যেমন তেমন গরম হলেও হাসপাতালে ভেতরে সেদ্ধ হওয়ার উপক্রম। যেন চুলা জ্বলছে। রোগী নিয়ে ওয়ার্ডের ভেতরে গাদাগাদি করে থাকা যায় না। তাই একটু প্রশান্তির জন্য খোলা জায়গায় ছেলেকে নিয়ে ঠাঁই নিয়েছি। এখানে উপরে সিলিং ফ্যান নেই। ছোট টেবিল ফ্যান কিনে এনেছি। সেটির জন্যও লাইনের ব্যবস্থা নেই। অবশেষে দুটি প্লাস্টিকের হাত পাখা কিনে এনে বাতাস করছি।

একই ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি প্রবীর (৬০) নামে এক রোগী। তার ছেলে রাহুল বলেন, বাইরের চেয়ে হাসপাতালে ভেতরে তিনগুণ গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে বাবা বারবার বলছেন, যেভাবে হোক এসি কেবিনের ব্যবস্থা করতে। তা না হলে বাসায় চলে যেতে চাচ্ছেন।

ইনডোর রুগিদের পাশাপাশি আউটডোর রুগিদের কষ্টও কম নয়। দীর্ঘ সময় ডাক্তারের জন্য অপেক্ষায় থাকতে থাকতে অরও অসুস্থ হয়ে যাওয়ার অবস্থা। তাছাড়া বর্হিবিভাগে রুগি বেশি হওয়ায় চিকিৎসকরাও হিমসিম খাচ্ছেন, গরম না হলে এত কষ্ট হয়না কেননা তখন রুগি অনেক সময় অপেক্ষা করলেও কোন সমস্যা হয় না।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আসলে গরমে মানুষ কষ্ট করছে। এই গরম থেকে রেহাই পাচ্ছেন না হাসপাতালে রোগীরাও। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সব ওয়ার্ডে সব সিলিং ফ্যান চালু রাখা হয়েছে। অনেক জায়গায় পুরোনো ফ্যান খুলে নতুন ফ্যান লাগানো হয়েছে।

তিনি বলেন, ওয়ার্ডের সিলিং অনেক উপরে থাকায় ফ্যানের বাতাস রোগীর গায়ে পৌঁছাতে পারে না। এ কারণে বেশ কিছু ওয়ার্ডে লোহার পাইপের সঙ্গে সিলিং ফ্যান জোড়া দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বৈদ্যুতিক প্লাগগুলো সচল রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যেন রোগীরা বাইরে থেকে কিনে আনা তাদের ছোট ছোট ফ্যানগুলো চালু রাখতে পারেন।

এআর-২০/০৪/২৪

Share your comment :