ব্রাজিলে বন্যায় লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত, মৃত্যু বেড়ে ১২৬

ব্রাজিলে বন্যায় লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত, মৃত্যু বেড়ে ১২৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য হিও গ্রাঞ্জে দো সুলে রেকর্ড বন্যায় চার লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১২৬ জনের আর নিখোঁজ রয়েছেন আরও ১৪১ জন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাঝখানে বন্ধ থাকার পর শুক্রবার বৃষ্টি আবার ফিরে এসেছে।

এক কোটি ৯ লাখ জনসংখ্যার রাজ্যটি বন্যার পাশাপাশি ঝড়েও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুমুল বৃষ্টিতে রাজ্যটির অনেকগুলো নদী ও হ্রদের পানি সর্বোচ্চ উচ্চতায় পৌঁছানোর নতুন রেকর্ড গড়েছে। বন্যায় বহু সড়ক ডুবে গেছে, ফলে যান চলাচল ব্যাহত হয়ে কয়েকটি এলাকায় নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেশটির সিভিল ডিফেন্স সর্বশেষ তথ্যে জানিয়েছে, বন্যায় এ পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসদানকারী মেটসুল জানিয়েছে, শুক্রবার হিও গ্রাঞ্জে দো সুলের অধিকাংশ শহরে বৃষ্টি হতে পারে, ঝড় হওয়াও সম্ভাবনা আছে। ঝড়বৃষ্টি সোমবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

ব্রাজিলের এই রাজ্যটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ও মেরু বায়ুমণ্ডলের এক ভৌগলিক মিলনস্থল, ফলে এখানে এমন এক অবহাওয়া প্যাটার্ন তৈরি হয়েছে যেখানে একসময় প্রচুর বৃষ্টি হয় আর অন্যসময় খরা বিরাজ করে। স্থানীয় বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই আবহাওয়ার ধরনটি আরও তীব্র হয়েছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, রাজ্যের রাজধানী পের্তো আলেগ্রির সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কানোয়াসের ছয় হাজারেরও বেশি বাসিন্দা স্থানীয় একটি কলেজে আশ্রয় নিয়েছেন। কলেজটিকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
বন্যার কারণে পের্তো আলেগ্রির বিদ্যুৎ ও পানি শোধনাগারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শহরের অধিকাংশ এলাকা পানি ও অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে আছে। নগরীর অধিকাংশ বাসিন্দা পান করার পানিও পাচ্ছেন না।

রাজ্য সরকার জানিয়েছে, ৩৮৫০০০ মানুষ পানি পরিষেবাবিহীন অবস্থায় রয়েছেন আর প্রায় ২০টি শহর টেলিযোাগাযোগ আওতার বাইরে রয়েছে।

রাজ্যের গর্ভনর এদুয়ার্দো লেইচে জানিয়েছেন, প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী হিও গ্রাঞ্জে দো সুলের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পুনর্নির্মাণের জন্য অন্তত ৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। বৃহস্পতিবার ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যটিকে সহায়তার জন্য ত্রাণের একটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

এআর-১১/০৫/২৪

Share your comment :