জমজমাট রাজশাহীর সিল্কপল্লি, প্রত্যাশা ৫০ কোটি টাকার বাণিজ্য
রাজশাহী প্রতিনিধি:
ঈদুল ফিতরের আর বাকি মাত্র দেড় সপ্তাহ। আর ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে জমে উঠেছে রাজশাহীর সিল্কপল্লি। কারাখানাগুলোতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কর্মীরা। ক্রেতা সমাগমে জমে উঠেছে শো-রুমগুলোও।
রাজশাহীসহ বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকেও প্রিয়জনদের পোশাক কিনতে ক্রেতারা আসছেন। পাশাপাশি পাইকারি ক্রেতাদের আগমনও এবার ভালো। ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে সবমিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকার বাণিজ্য প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
প্রতি বছরের মতো এবারো রেশমের তৈরি পোশাকে এসেছে বৈচিত্র্য এবং নতুনত্বের ছোঁয়া। নজরকাড়া বাহারি ডিজাইন সব বয়সি ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছে। এ শো-রুম থেকে ওই শো-রুম নিজের পছন্দের পোশাক খুঁজছেন ক্রেতারা। তবে ক্রেতারা জানিয়েছেন, বিগত বছরের চেয়ে পোশাকের দাম এবার একটু বেশি।
সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর বিসিক এলাকার প্রতিটি শো-রুমেই ক্রেতা সমাগম ভালো। ক্রেতা উপস্থিতি ভালো হওয়ায় ফুরফুরে মেজাজে বেচা-বিক্রি করছেন মালিকরা। রাজশাহীর সপুরা সিল্ক, উষা সিল্ক, আমানা সিল্ক, রাজশাহী সিল্কসহ সব প্রতিষ্ঠানেই একই চিত্র। এবার সিল্কের শাড়ি এবং পাঞ্জাবির পাশাপাশি থ্রিপিস ও বাচ্চাদের সামগ্রীগুলোর চাহিদাও প্রচুর।
শো-রুমগুলোতে যখন ক্রেতাদের নিয়ে ব্যস্ততা তখন কারখানাগুলোতে একদিকে গুটি থেকে সুতা কাটা হচ্ছে, অন্যদিকে সেই সুতা থেকে মেশিনের মাধ্যমে কাপড় বোনাতে ব্যস্ত কারিগররা। সে কাপড়ে বিভিন্ন নকশা ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা।
নগরীর সপুরা সিল্কের শো-রুমে স্কুল শিক্ষিকা মালেকা বেগমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, আমার বাড়ি কুষ্টিয়া। এর আগেও অনেকবার রাজশাহী থেকে সিল্কের কাপড় নিয়ে গেছি। বিশেষ করে বড় উৎসবগুলোতে কাপড় কেনার প্রথম তালিকায় রাজশাহীর সিল্কই থাকে। এখানকার পোশাকের কোয়ালাটি ভালো। তবে এবার দামটা একটু বেশি।
সপুরা সিল্কে শাড়ি কিনতে আসা সুলতানা পারভীন বলেন, আমি রাজশাহীর মেয়ে। যে কোনো ধরনের অনুষ্ঠানে সিল্কের কাপড় না হলে চলেই না। তাই এ বছর ঈদেও রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী সিল্কের কাপড় কিনতে এসেছি। তবে এবার দাম বেশি হলেও নতুন ডিজাইনগুলো অনেক অনেক চমৎকার।
সপুরা সিল্ক মিলসের ম্যানেজার মো. সাইদুর রহমান বলেন, তিন হাজার থেকে শুরু করে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত শাড়ি বানিয়েছি আমরা। আমাদের এখানে সাড়ে ৪ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে পাঞ্জাবি, আড়াই হাজার থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে শার্ট, ৬৫০ টাকা থেকে ৪০ হাজার টাকার মধ্যে থ্রি-পিস পাওয়া যাবে। এছাড়াও ওড়না-স্কাপসহ সিল্কের সবকিছুই রয়েছে। এবার থ্রি-পিসের চাহিদা বেশি বলে জানান তিনি।
রাজশাহী সিল্কের ফ্যাশন ম্যানেজার সেলিম রেজা বলেন, প্রতিটি উৎসবকে কেন্দ্র করে আমাদের অগ্রিম প্রস্তুতি থাকে। ডিজাইনে ব্যাপক পরিবর্তন আনার কাজ করা হয়। এবারো নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক তৈরি করা হয়েছে।
রাজশাহী সিল্ক মালিক সমিতির সভাপতি মো. লিয়াকত আলী বলেন, ঈদ উৎসবকে সামনে রেখে বেচা-বিক্রি জমে উঠছে। আগামী কয়েক দিনে বিক্রি আরও বাড়বে। আশা করা হচ্ছে, এবার ঈদে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ব্যবসা করবেন সিল্ক পোশাক ব্যবসায়ীরা।
এআর-২৯/৩/২৪
Share your comment :