তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ পাচ্ছে আইসিবি, গ্যারান্টার সরকার
বাংলাকণ্ঠ রিপোর্ট :
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ পাচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)। এই ঋণের গ্যারান্টার হচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে সভরেন (রাষ্ট্রীয়) গ্যারান্টি অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সেখানকার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা এবং আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ গণমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আইসিবি যেন ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ পায়, সেজন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি) থেকে একটি সুপারিশ অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, আইসিবির ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণের জন্য সভরেন গ্যারান্টি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির এখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ পাওয়ার দরজা খুলে গেছে।
তিনি জানান, আইসিবি যে ঋণ পাচ্ছে তার সম্পূর্ণ টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে না। ঋণের একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে। একটি অংশ সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে। ঋণের অর্থ কীভাবে ব্যবহার হবে, তার একটি গাইডলাইন থাকবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার ঋণ পেতে রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি চেয়ে আইসিবি চলতি বছরের ১৪ অক্টোবর চিঠি দিয়েছিল। এর পর ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং আইসিবির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে আর্থিক সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা থাকায় ওই বৈঠক থেকে অর্থ বিভাগকে রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারের গ্যারান্টি সাপেক্ষে ঋণ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের আপত্তি নেই।
সম্প্রতি বিএসইসি কার্যালয়ে গিয়ে বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ওই বৈঠকে পুঁজিবাজারের ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধনি মুনাফায় করহার কমানোর এবং আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়াতে সহযোগিতা দেওয়াসহ বেশকিছু সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা জানান, পুঁজিবাজারের সংকটে কিছু প্রণোদনা দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর পর গত সোমবার মূলধনি মুনাফার ওপর করহার কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন আইসিবিকে ঋণ পেতে গ্যারান্টি দিতেও সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
আইসিবির চেয়ারম্যান আবু আহমেদ বলেন, ঋণ পাইয়ে দিতে অর্থ উপদেষ্টা সহযোগিতা করছেন। আমরা আশা করছি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শিগগির এই ঋণ পাওয়া যাবে। এই ঋণ পেলে আইসিবির বিনিয়োগ সক্ষমতা বাড়বে।
ঋণের অর্থ কীভাবে ব্যবহার হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঋণের একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। কিছু অর্থ সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে। ঋণের অর্থ কীভাবে ব্যয় হবে তার একটি খসড়া পরিকল্পনা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। পুঁজিবাজারে কতটা বিনিয়োগ করা হবে, সে বিষয়ে বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে।
আবু আহমেদ আরও বলেন, আইসিবির কিছু উচ্চসুদের ঋণ আছে। তাতে সুদ বাবদ বছরে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণের অর্থ পাওয়া গেলে এই ঋণের একটি অংশ ফেরত দেওয়া হবে।
এএ/
Share your comment :