ত্রিমুখী লড়াইয়ে জমজমাট আটাব নির্বাচন

ত্রিমুখী লড়াইয়ে জমজমাট আটাব নির্বাচন


নিজস্ব প্রতিবেদক
জমে উঠেছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সিজ অব বাংলাদেশের- আটাব নির্বাচন। দেশের ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর সর্বোচ্চ সংগঠনের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আগামীকাল (মঙ্গলবার) রাজধানীর ইস্কাটন পুলিশ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের আটাব নির্বাচনে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্ধিতা করছে। ৩৫০০ সদস্যের মধ্যে এবার ভোটার হয়েছেন ২ হাজার ৫০০ জন। ভোটাররা ২৯ সদস্যের কার্যনির্বাহী কামিটি’র বিভিন্ন পদে ভোট দিবেন। এদের মধ্যে ঢাকা জোনে ১৭ জন এবং চট্টগ্রাম ও সিলেট জোনে ৬ জন করে নির্বাচিত হবেন।
আটাব সূত্রে জানা যায়, এবারের আটাব নির্বাচনে তিনটি প্যানেলের মধ্যে সংগঠনের সিনিয়র সদস্য ও হাবের সাবেক সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আটাব সম্মিলিত ফোরাম, আটাবের সাবেক মহাসচিব আসলাম খান ও বিদায়ী মহাসচিব আবদুস সালাম আরেফের নেতৃত্বাধীন প্যানেল প্রতিদ্বন্ধিতা করছে। এরমধ্যে হজ এজেন্সি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসেন তসলিমসহ আটাব ও হাবের সাবেক কমপক্ষে ৭ জন সাবেক সভাপতি ফরিদ আহমেদ মজুমদারের প্যানেলকে সমর্থন করছেন। অপরদিকে আটাবের সাবেক মহাসচিব আসলাম খানের সমর্থনে বিদায়ী সভাপতি মঞ্জুর মাহবুব মোর্শেদ এবং সাবেক এক সভাপতি আবদুস সালাম আরেফকে সমর্থন দিয়েছেন। ফলে ইতোমধ্যে বেশ জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা।
আটাব সংশ্লিষ্টরা জানান, ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর অধিকার নিশ্চিত করে সংগঠনের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনা এবং বিমান ভাড়া কমানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন ট্রেডে পরিছন্ন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ফরিদ উদ্দিন আহমেদ মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আটাব সম্মিলিত ফোরাম। এ প্যানেলের প্রতি হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) তিনবারের নির্বাচিত সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, আটাব সম্মিলিত ফোরামের প্রধান পরামর্শক মোহাম্মদ গোলাম ফারুক এমপি, আটাবের সাবেক সভাপতি মনসুর আহমেদ কালাম, হাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. সোহাম্মদ ফারুক, সাবেক সভাপতি মো. আব্দুস শাকুর,
সৈয়দ গোলাম সরোয়ার, হাবের সাবেক সভাপতি ইবরাহিম বাহার-সহ আটাব ও হাবের সিনিয়র ব্যবসায়িরা সমর্থন করছেন।
আটাবের একাধিক সদস্য জানান, গত দুই বছরে বেশ কিছু আর্থিক অনিয়মের কারণে বর্তমান কমিটির শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে বিরোধপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে আটাব সূত্রে জানা গেছে। ফলে এবারের নির্বাচনে তারা আলাদা দুটি প্যানেল গঠন করেছে। ভোটাররা দাবি করেছেন যে বিদায়ী কমিটি তাদের আমলে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর (ওটিএ) পক্ষে কাজ করেছে। ফলে সরকার অনুমোদিত অধিকাংশ ট্রাভেল এজেন্সি তাদের বাজার হারিয়েছে। ওটিএ প্লাটফর্মে শুধুমাত্র ছয়টি ট্রাভেল এজেন্সি পুরো মার্কেটের ৬০ শতাংশ শেয়ারের আধিপত্য বজায় রেখেছে, যেখানে ৪,০০০টিরও বেশি বৈধ ট্রাভেল এজেন্সি বাকি ৪০ শতাংশ শেয়ার করছে। এ অবস্থায় দুর্নীতিমুক্ত আটাব প্রতিষ্ঠায় অধিকাংশ ভোটার তাদের নেতৃত্বে পরিবর্তন চান।
অপরদিকে সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালে ২০১৯ সালে আটাব অনলাইন লিমিটেড নামে একটি এজেন্সি খুলে শতাধিক ব্যক্তির কাছে থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকা শেয়ার বাবদ নেন মঞ্জুর মাহবুব মোর্শেদ। কিন্তু সরকারী অনুমোদন না পাওয়া এই উদ্যোগ ভেস্তে যায়। এখন পর্যন্ত শেয়ারের প্রত্যাশিত টাকা ফেরত পাননি অনেকেই। নিজেদের টাকা পেতে মন্ত্রণালয় ও আটাবে বিনিয়োগকারীর লিখিত অভিযোগ করেন। এটি নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে আটাব সদস্যদের। যা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা অনেক আটাব সদস্যদের।

Share your comment :