ব্যাপ্তি বাড়ছে আন্দোলনের, ঢাকার ১০ পয়েন্ট বন্ধ

ব্যাপ্তি বাড়ছে আন্দোলনের, ঢাকার ১০ পয়েন্ট বন্ধ


বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট
সরকারি চাকরিতে কোটা না রাখার দাবিতে সোমবার রাজধানীর ১০ পয়েন্টে অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, সায়েন্স ল্যাব মোড় ও গুলিস্তান জিরো পয়েন্টসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সড়কে শান্তিপূর্ন অবস্থান করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন তারা। পূর্ব ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বিকেল সাড়ে ৪টার পর এই অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। এ সময় অফিস ত্যাগকারী শত শত গাড়ীর অসংখ্য মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় আটকে পড়ে।
আন্দোলনের মূল কেন্দ্র শাহবাগের পাশাপাশি রামপুরা, বাড্ডায়ও সড়ক অবরোধ করা হয়েছে বলে শাহবাগের সমাবেশ থেকে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সড়ক আটকে দেওয়ায় গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে যেসব গাড়ি ছিল, সেখানেই সেগুলো দাঁড়িয়ে গেছে। এতে ঢাকার বড় অংশ কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দফা দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলন করছেন। বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে মিছিল বের করেন তাঁরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শাহবাগ মোড়ে আসে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে। মিছিলের সামনের অংশটি সড়ক অবরোধ করতে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও বাংলামোটর মোড়ের দিকে চলে যায়। পেছনের অংশটি শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়।
শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারীরা দাবির পক্ষে নানা স্লোগান ও বক্তব্য দেন তারা। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড় দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। সড়কের এক পাশে পুলিশ অবস্থান করে। তবে তারা আন্দোলনকারীদের বাধা দেয়নি।

এদিকে গতকাল রোববার থেকে ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে আজও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট পালন করছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের দাবিতে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি আরও তিনটি দাবি জানাচ্ছেন। এগুলো হলো ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে, সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী শুধু অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে; সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা–সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না ও কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

Share your comment :