ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহকালে তিন সাংবাদিক লাঞ্ছিত
ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের নগরকান্দায় ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহকালে স্থানীয় তিন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার কোদালিয়া-শহিদনগর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা জানান, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকে কোদালিয়া-শহিদনগর ইউনিয়ন পরিষদে ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতে অনিয়মের মাধ্যমে ভিজিএফের চাল বিতরণ কার্যক্রম চলছিল।
খবর পেয়ে মাই টিভির নগরকান্দা প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জনি, যুগান্তরের নগরকান্দা প্রতিনিধি মিজান বাবু ও সময়ের আলোর নগরকান্দা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান ওই ইউনিয়ন পরিষদে সংবাদ সংগ্রহ করতে যান। এ সময় সংবাদ সংগ্রহের কাজে বাধা দিয়ে পরিষদ থেকে তাদেরকে বেরিয়ে যেতে বলেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার জাকির হোসেন নিলু। অনিয়মের বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে লাঞ্ছিত ও খারাপ আচরণও করেন তিনি।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম জনি বলেন, প্রত্যেক উপকারভোগীকে ১০ কেজি করে ভিজিএফের চাল বিতরণের কথা থাকলে ওই ইউনিয়ন পরিষদে ৮ কেজি করে চাল বিতরণ করা হচ্ছিল। বিষয়টি স্থানীয়রা আমাদের জানালে আমরা ওই ইউনিয়ন পরিষদে যাই। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের দেখেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন।
আমাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন। ভিডিও ধারণে বাধা দিয়ে পরিষদ থেকে আমাদের বের করে দেন। তিনি আরও বলেন, চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত ছিলেন না। এমন কি চাল মাপার কোনো মেশিনও আমরা দেখিনি।
সাংবাদিকের সঙ্গে খারাপ আচরণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নগরকান্দা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. মাহবুব আহাদ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার জাকির হোসেন নিলু সাংবাদিক বিদ্বেষী লোক। তিনি কখনো সাংবাদিকদের দেখতে পারেন না, সব সময় খারাপ আচরণ করার চেষ্টা করেন। আমি আজকের এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ বিষয়ে কোদালিয়া-শহীদনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান খন্দকার জাকির হোসেন নিলু বলেন, একজন সাংবাদিক পরিচয় না দিয়ে ভিডিও করতে করতে পরিষদের গোডাউনে ঢুকতে গিয়েছিল। পরে আমি তাকে বাধা দিয়ে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছি।
আমি যদি জানতাম সে সাংবাদিক, তাহলে তাকে বাধা দিতাম না, বরং চাল পরিমাপ করে দেখিয়ে দিতাম। চাল বিতরণে অনিয়ম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ট্যাগ অফিসারের প্রতিনিধি ও ইউপি সদস্যদের উপস্থিতে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এখানে একছটাক চালও কম দেয়া হয়নি।
এব্যাপারে নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফি বিন কবির বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে এক ইউপি চেয়ারম্যানের খারাপ আচরণের একটি ভিডিও আমি দেখেছি। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যা খুবই দু:খজনক। আমি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি দু:খ প্রকাশ করেছেন।
চাল বিতরণে অনিয়ম প্রসঙ্গ ইউএনও বলেন, চাল যদি কম বিতরণ করে থাকে, সেটা আমরা তদন্ত করে দেখছি। যদি অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এআর-০৪/০৪/২৪
Share your comment :