যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির উদ্যোগে বিজয় দিবস পালন


বাংলাকন্ঠ রিপাের্ট:

যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও এর সহযোগী সংগঠনসমূহের উদ্যোগে ৫৪তম বিজয় দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে এক বর্ণাঢ্য আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা: মুজিবুর রহমান মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ১৫ জন মুক্তিযোদ্ধাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয়।
সাবেক ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মোতাহার হোসেন, উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও সাবেক ছাত্রনেতা এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোশারফ হোসেন সবুজ ও জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক, সাবেক ছাত্রনেতা মাকসুদুল হক চৌধুরীর যৌথভাবে সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে (ভার্চুয়ালী) বক্তব্য দেন বিএনপির কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালে পালিয়েছে এবং ২০২৪ সালেও পালিয়েছে। এ দলটি কখনোই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং এটি একটি ফ্যাসিস্ট দল। বিপরীতে বিএনপিই একমাত্র গণমূখী রাজনৈতিক দল হিসেবে নানান সংকটের মধ্যেও টিকে ছিল এবং থাকবে। আগামীতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপিই সরকার গঠন করবে।

প্রধান বক্তা হিসেবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইশতিয়াক আজিজ উলফাত মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ত্যাগ ও সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন এবং প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
এর আগে সভায় স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। তারা ‘পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তন ১৯৪৭-১৯৭১’, ‘উত্তাল মার্চ ১৯৭১’, ‘রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার সত্য ঘটনা’, ‘মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস’, ‘মুজিব বাহিনীর তথাকথিত মুক্তি যুদ্ধ ও ভারতীয় ষড়যন্ত্র’, ‘বামপন্থীদের মুক্তি যুদ্ধ’ ‘আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যর্থতা’, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের হস্তক্ষেপ, ‘স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের হস্তক্ষেপ, লুটপাট ও হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক আলোচনায় অংশ নেন।
বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির অন্যতম নেতা মিজানুর রহমান মিল্টন ভূঁইয়ার সার্বিক সহযোগিতা ও বিএনপি নেতা মোতাহার হোসেনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত সভায় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির ইতিহাসের সর্বাধিক মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত এ অনুষ্ঠানে ব্যাপক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিল।
উদযাপন কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিনের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে মূল আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মুক্তিযোদ্ধা কামাল সাঈদ মোহন, মুক্তিযোদ্ধা কাজী আজাহারুল হক মিলন, মুক্তিযোদ্ধা আনিসুজ্জামান খোকন মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা আলী ইমাম সিকদার. মুক্তিযোদ্ধা মাঈনউদ্দিন নাসের, জাকির এইচ চৌধুরী, ডা: জাহিদ দেওয়ান শামীম প্রমুখ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব সোলাইমান ভূঁইয়া, ডা: আব্দুস সবুর, আবু সুফিয়ান, মুক্তিযোদ্ধা সুরুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম হোসেন, সৈয়দ এ আর ফারুক,মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব.কাজী মনির হোসেন, বাতেন সরকার প্রমুখ বক্তব্য দেন। এছাড়া কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদুল্লাহ তালুকদার, যুবদল নেতা মোহাম্মদ কাশেম, তারিক চৌধুরী দিপু, আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম সিকদার, সাবেক ছাত্রনেতা পারভেজ সাজ্জাদ, মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া. নুরে আলম, আশরাফুজ্জামান আশরাফ, মাযহারুল ইসলাম মিরন, মনিরুল ইসলাম মনির, মো: মাসুদ হোসেন, মুস্তাক আহমেদ, প্রফেসর আহসান উল্লাহ মিন্টু, আবুল কালাম, রাশেদ রহমান, সাইফুল ইসলাম সৈকত ভূঁইয়া, জান্নাতুল ফেরদৌস অশ্রু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে ডা: মুজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং তার ঘোষণার পরে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা যুদ্ধের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তী ঘটনার পরে এদেশের মানুষ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্র পরিচালনা করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন এবং তিনি একটি আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের কাজ যখনই শুরু করেছেন, ঠিক তখনই একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে তাকে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্র উদ্ধার ও বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এদেশের গণতন্ত্রকে বিগত ১৬ বছর হত্যা করা হয়েছে এবং এবং ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা মানুষের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালিয়েছে। তবুও বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে গত ১৬ বছর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন এবং সর্বশেষ জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার হাসিনার পতন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনের বাংলাদেশ করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
সভার শুরুতে মৃধা মোহাম্মদ জসীম পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত এবং বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন। এ সময় স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের ও জুলাই ২৪ এর শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এছাড়া মরহুম আরাফাত রহমান আত্মার মাগফেরাত কামনা, বিএনপির চেয়ারপারসন ও গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক সুস্থতার জন্য দোয়া করা হয়। একইসঙ্গে তারেক রহমান ও তার পরিবারের সকল সদস্যের সুস্থতা কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।

Share your comment :