যে কারণে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর একটি ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাথমিকভাবে বলা হয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ নানা কারণে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর নেতজা ইয়াহুদা ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল বলছে, তারা যেকোনো মূল্যে এই নিষেধাজ্ঞা অকার্যকর করা বা ঠেকানোর চেষ্টা করবেন। ঠিক কেন এবং কোন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি। তবে নেতজা ইয়াহুদা ব্যাটালিয়নের ওপর নিষেধাজ্ঞা কেন আরোপ করা হবে এবং এর ফলে কী হবে, তা উঠে এসেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষাবাহিনীতে (আইডিএফ) নেতজা ইয়াহুদা ব্যাটালিয়ন চালু করা হয় ১৯৯৯ সালে। মূলত কট্টর অর্থোডক্স ইহুদিদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে সেনাবাহিনীতে ঠাঁই দিতেই এই ব্যাটালিয়ন চালু করে ইসরাইল।
বিশেষ করে কট্টর অর্থোডক্স ইহুদিদের ধর্মবিশ্বাস অক্ষুণ্ন রাখার সুযোগ দিতেই এই ব্যাটালিয়ন চালু করা হয়। বিশেষ করে সেনাদের ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা যেমন—প্রার্থনার সময় দেওয়া, ধর্মীয় অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া নারী সেনাদের তাদের কাছ থেকে দূরে রাখার সুযোগ দেওয়া হয় এখানে।
ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ৭৮ বছর বয়সী ওমর আসাদের মৃত্যুর পর যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে বলে। দেশটির নেতজা ইয়াহুদা ব্যাটালিয়ন ওমর আসাদকে ধরে দিয়ে যায় এবং পরে তার মরদেহ একটি ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়।
ওমর আসাদের মরদেহের ময়নাতদন্তের পর থেকে দেখা যায়, তিনি প্রবল উদ্বেগজনিত কারণে হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। একই সঙ্গে তার গায়ে আঘাতের চিহ্নও ছিল। সাধারণ ফিলিস্তিনি হলে হয়তো বিষয়টি নিয়ে অতটা হইচই হতো না। কিন্তু ওমর আসাদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও নাগরিক হওয়ায় বিষয়টি হালে পানি পায়।
ওমর আসাদের বয়স ও অন্যান্য শর্ত বিবেচনায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করতে বলে ইসরাইলকে। জানা গেছে, ওমর আসাদকে গ্রেফতারের পর নেতজা ইয়াহুদা ব্যাটালিয়নের সেনারা তার মুখে কাপড় গুঁজে দেয় এবং হাতকড়া পরায়। তাদের অভিযোগ, ওমর আসাদ সহযোগিতা করতে রাজি না হওয়ায় এমনটা করা হয়েছে।
ওমর আসাদের মৃত্যুর পর নেতজা ইয়াহুদার কমান্ডারকে তিরস্কার করা হয় এবং দুই কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। কিন্তু ইসরাইলি সামরিক আদালত তাদের বিরুদ্ধে কোনো বিচারিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে অস্বীকার করেন। তাদের যুক্তি হলো, ওমর আসাদের মৃত্যুতে সেনাদের কোনো ত্রুটি আছে এমনটার প্রমাণ নেই।
এর বাইরেও নেতজা ইয়াহুদা ব্যাটালিয়নের বিরুদ্ধে আরও অনেক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন ভিডিও থেকে দেখা গেছে, ব্যাটালিয়নটির সেনারা ফিলিস্তিনি বন্দীদের সঙ্গে অমানবিক ও নোংরা আচরণ করছেন।
এআর-২৩/০৪/২৪
Share your comment :