শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় ধ্বংসের শক্তি : রিজভী
নিজস্ব প্রতিবেদক :
শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় রয়েছে ধ্বংসের শক্তি এমন মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, রাজসিংহাসন দখলে রেখে অনন্তকাল অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্য আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠান দুমড়ে মুচড়ে ফেলেছে।
রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার (১২মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, যেখানেই ভোট, সেখানেই আওয়ামী ভোট ডাকাত-সেখানেই সন্ত্রাস! দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের সংগঠনও তাদের কালো থাবায় বিপর্যস্ত। এভাবে চলতে থাকলে দেশকে ভয়ানক গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেয়া হবে।
সদ্য সমাপ্ত সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে রিজভী আহমেদ বলেন, লণ্ডভণ্ড নির্বাচনী ব্যবস্থা ও পেশী-শক্তির প্রতিফলন দেশের জনগণ অবলোকন করলো সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনেও। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে রাখতে আওয়ামী লীগ যে সকল কুটকৌশল অবলম্বন করছে তার সব কিছুই তারা সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে প্রয়োগ করেছে।
তিনি বলেন, গত ৬ এবং ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে নজিরবিহীন ভোট জালিয়াতি, কারচুপি, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে যুবলীগের হাঙ্গামা, সংঘর্ষ, অস্ত্রের মুখে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথিকে সম্পাদক পদে নির্বাচিত ঘোষণা, পরে আবার শেখ হাসিনা ও মেয়র তাপসের প্রার্থীকে সম্পাদক পদে বিজয়ী ঘোষণার মাধ্যমে দেশের সর্বোচ্চ আইনাঙ্গনের আইনজীবীদের মর্যাদা ধুলোয় লুটিয়ে দিয়েছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, এই ভোট জালিয়াতি ও নিজেদের অপকর্মের ঘটনা থেকে মানুষের দৃষ্টি সরাতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত মিথ্যা সাজানো মামলায় গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। ফলাফল গণনা নাটকের নামে জালিয়াতি করে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে হারিয়ে শেখ হাসিনা ও যুবলীগের চেয়ারম্যান পরশের আপন ভাই মেয়র তাপসের প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হককে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচনে ভোটে যার সেক্রেটারি নির্বাচিত হওয়ার কথা তাকে পাঠানো হয়েছে জেলখানায়, আর যার নিশ্চিত পরাজিত হওয়ার কথা তাকে শেখ হাসিনার নির্দেশে বসানো হয়েছে সম্পাদকের চেয়ারে। ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলকে যে মামলায় আটক করা হয়েছে সেই মামলায় এক নম্বর আসামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী নাহিদ সুলতানা যুথিকে গ্রেফতার তো দুরের কথা তার নাম নিতেও ভয় পাচ্ছে পুলিশ।
গতকাল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান বলেছেন, যুথিকে খুঁজে পাচ্ছে না আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। অথচ মামলার পর সেই রাতেই বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা আরো অভিযোগ করেন, ২০ জনের নামে করা এজাহারে যুথি শুধু এক নম্বর আসামীই নয়, দৃশ্যমান আক্রমণকারিদের একজন পৃষ্ঠপোষক। নির্বাচন সাব কমিটির কো-অপ্ট সদস্য সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সাইফুর রহমান সিদ্দিকী সাইফ
অথচ মামলার পরদিন শনিবার গ্রেপ্তার করা হয় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজলকে। পরশ-তাপস দুই ভাইয়ের মারামারি এবং পারিবারিক ক্ষমতার লাড়াই সামাল দিতে এবং সম্পাদক পদ দখলের জন্য কারারুদ্ধ করা হয়েছে কাজলকে। এমন সহিংস ঘটলেও বিচারপতিরা নিশ্চুপ।
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবসময় বলে আসছি যে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের ছত্র-ছায়ায় দেশের কোথাও কোন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।
সংবাদ সম্মেলনে, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল এবং ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীসহ গ্রেফতারকৃত বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের নিঃশর্ত মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও রিমান্ড বাতিলের দাবি করা হয়।
Share your comment :