হাত কাটার প্রতিশোধ নিতে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪
নিজস্ব প্রতিবেদক:
নড়াইলের লোহাগড়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।
গ্রেপ্তাররা হলেন-সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) রাতে র্যাব-৬, র্যাব-৭ এবং র্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী ও নড়াইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, ১০ মে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে গোয়েন্দা নজরদারির ধারাবাহিকতায় প্রধান আসামি সাজেদুলসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আগে থেকে দ্বন্দ্ব ছিল।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে বিরোধের জেরে মোস্তফা কামাল এবং আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামালের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে।
তিনি বলেন, লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেপ্তার সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধায় সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রসহ ঘটনাস্থলে অবস্থান করে।
মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্র সাজেদুল পিস্তল দিয়ে ৩ রাউন্ড গুলি করে। যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি মোস্তফা কামালের বুকে ও পিঠে লাগে এবং গুরুতর আহত হয়। পরে সাজেদুলসহ অন্যরা ঢাকা, পতেঙ্গা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারসহ ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
র্যাবের মুখপাত্র বলেন, সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র। সে আকবর হোসেন লিপনের অন্যতম প্রধান সহযোগী। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি, চুরি ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে।
রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। সে গ্রেপ্তার সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এ হত্যাকাণ্ডে তাকে ১ লাখ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে লোহাগড়া থানায় মারামারি সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে।
পাভেল স্থানীয় একটি স্কুলে এইচএচসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার মামুন মোল্যা পেশায় একজন চালক। তার বিরুদ্ধে ২টি মামলা রয়েছে।
এআর-১৭/০৫/২৪
Share your comment :