৭ সহযোগীসহ চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাং নেতা বাদশা গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম নগরে অস্ত্র ও সাত সহযোগীসহ এক কিশোর গ্যাং নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই নেতার নাম হেলাল বাদশা চৌধুরী। গতকাল শুক্রবার রাতে নগরের খুলশী ও আকবর শাহ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন আবদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. কাউসার, মেহেরাজ সামি, শেখ সাদি হাসান, সাগর হোসেন ও সাইফুল ইসলাম। তাঁদের প্রত্যেকের বয়স ১৮ বছরের বেশি।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নেয়ামত উল্লাহ নিজ কার্যালয়ে আজ শনিবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে নগরের খুলশী নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে থেকে মো. আরিফ নামের এক কিশোরকে হেলাল বাদশার নেতৃত্বে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে ১০-১৫ জন সহযোগী ছিল। তারা ওই কিশোরকে পার্শ্ববর্তী বাটাগলির একটি খালি জায়গায় বেঁধে মারধর শুরু করে পরে তার পরিবারের কাছে মুঠোফোনে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি ভুক্তভোগীর ভাই রাকিব হোসেন পুলিশের জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ কল দিয়ে জানান। বিষয়টি খুলশী থানা-পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ অভিযান শুরু করে।
ওসি আরও জানান, খুলশী থানা-পুলিশের একটি দল প্রথমে নগরের বাকলিয়া এলাকা থেকে ঘটনায় জড়িত আবদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরের আকবর শাহ ইস্পাহানি গেট পেট্রলপাম্পের পেছন থেকে হেলাল বাদশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার করা হয় অপহৃত কিশোরকে। ঘটনাস্থল থেকে হেলালের আরও সাত সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে নেতা হেলালকে সঙ্গে নিয়ে খুলশী বাটাগলির খালি প্লট থেকে দুটি কার্তুজসহ একটি দেশি আগ্নেয়াস্ত্র (এলজি) উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় অপহরণ ও চাঁদাবাজি এবং অস্ত্র আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, চট্টগ্রাম নগরে অন্তত ২০০ কিশোর গ্যাং সক্রিয়। প্রতিটি দলে ৫-১৫ জন সদস্য রয়েছে। পুলিশের হিসাবে, নগরজুড়ে এসব গ্যাংয়ের সদস্যসংখ্যা অন্তত ১ হাজার ৪০০।
পুলিশের ভাষ্য, গত ছয় বছরে ৫৪৮টি অপরাধের ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। এর মধ্যে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৩৪টি।
চলতি বছরের শুরুতে নগর–পুলিশের করা এক জরিপে দেখা যায়, নগরে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নবম-দশম শ্রেণির ছাত্রদের অনেকে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে অভিভাবকদের অগোচরে এলাকাভিত্তিক কিশোর গ্যাংয়ের ‘বড় ভাই’দের প্ররোচনায় অপরাধে জড়াচ্ছে। শুরুতে তারা ‘হিরোইজম’ (বীরত্ব) দেখানোর জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে। পরে আর তা থেকে বের হতে পারে না।
এআর-১৮/০৫/২৪
Share your comment :