ভারতকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা বাতিল করল সুইজারল্যান্ড
বাংলাকণ্ঠ ডেস্ক :
ভারতকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ (এমএফএন) স্ট্যাটাস বাতিল করেছে ইউরোপের দেশ সুইজারল্যান্ড।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
সুইজারল্যান্ডের এমএফএন বাতিলের পদক্ষেপটি ভারতের পণ্য রফতানি ও দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মত অর্থনীতি বিশ্লেষকদের।
তারা জানিয়েছেন, এমএফএন বাতিলের কারণে সুইজারল্যান্ডে কর্মরত ভারতীয় কোম্পানিগুলির ওপর উচ্চ কর আরোপ করা হতে পারে। এতে দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে ধারণা তাদের।
গত ১১ ডিসেম্বর প্রকাশিত সুইস অর্থ বিভাগের এক বিবৃতি অনুসারে, ভারতের সুপ্রিম কোর্টের গত বছরের এক রায় অনুসরণ করে এমএফএন বাতিলের পদক্ষেপটি নিয়েছে সুইজারল্যান্ড। সেসময় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নেসলের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানান, দ্বৈত কর নিরসন চুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারতে কার্যকর হবে না।
এ রায় অনুসরণ করেই ভারত কর ছাড় না দেওয়ায় কঠোর হলো সুইজারল্যান্ড।
মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) ধারা অনুযায়ী, ভারত ও কোনো তৃতীয় অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট দেশের মধ্যে লভ্যাংশ, সুদ, রয়্যালটি বা প্রযুক্তি সেবার ফি-র ওপর কম করের হার প্রযোজ্য হলে, তা সুইজারল্যান্ড ও ভারতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে।
কলম্বিয়া এবং লিথুয়ানিয়ার সঙ্গে কর চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত। যার ফলে নির্দিষ্ট ধরনের আয়ের ওপর কর হার নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা ওইসিডি দেশগুলিকে প্রদত্ত হারের চেয়ে কম ছিল। পরে দুটি দেশ ওইসিডি-তে যোগ দেয়।
এর আগে ২০২১ সালে সুইজারল্যান্ডে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য উৎসে কর হার ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল।
কিন্তু এমএফএন স্ট্যাটাস বাতিল করার পর আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে সুইজারল্যান্ডে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য উৎসে কর হার আবারও ১০ শতাংশ হবে।
সুইস ফাইন্যান্স বিভাগের ব্যাখ্যা, কলম্বিয়া এবং লিথুয়ানিয়া ওইসিডি-তে যোগদানের অর্থ হল এমএফএন ধারার অধীনে ভারত-সুইজারল্যান্ড কর চুক্তিতে বর্ণিত ১০ শতাংশের পরিবর্তে লভ্যাংশের জন্য ৫ শতাংশ হার প্রযোজ্য হবে।
সুইস কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে নাঙ্গিয়া অ্যান্ডারসেনের এম অ্যান্ড এ ট্যাক্স পার্টনার সন্দীপ ঝুনঝুনওয়ালা বলেন, ভারতের সঙ্গে তাদের কর চুক্তির অধীনে এমএফএন ধারা প্রয়োগের একতরফা স্থগিতাদেশ দ্বিপাক্ষিক চুক্তির গতিশীলতার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। এই স্থগিতাদেশ সুইজারল্যান্ডে কর্মরত ভারতীয় সংস্থাগুলির জন্য কর দায় বাড়াবে। যা একটি ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক কর চুক্তিগুলি নেভিগেট করার জটিলতাগুলিকে তুলে ধরে।
উল্লেখ্য, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুসারে, একটি দেশ যদি অন্য কোনও দেশকে এমএফএন মর্যাদা দেয়, তাহলে সেই দেশের প্রতি শুল্ক ও বাণিজ্যনীতি সম্পর্কিত বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে হয়। এতদিন সুইজারল্যান্ড ভারতকে এই সুবিধা দিয়ে আসছিল।
এএ/
Share your comment :