জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের দাবি

জাতিসংঘ থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালানোসহ বিরামহীনভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জাতিসংঘ ও এর সব সংস্থা থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশের ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি।

সোমবার (২৫মার্চ) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতিসংঘের কার্যালয়ে ওই দাবি–সংবলিত চিঠি দেওয়া হয়। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বরাবর চিঠিটি দেন কমিটির আহ্বায়ক ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি ও পেশাজীবীদের একটি মঞ্চ। আজ এই কমিটি চিঠি নিয়ে গেলে জাতিসংঘ কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা ফটকে এসে তা গ্রহণ করেন।

এর আগে আগারগাঁও মেট্রোরেল কার্যালয় প্রাঙ্গণে সমাবেশ করে ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আজ সারা পৃথিবীর মানুষ বিক্ষুব্ধ। ইসরায়েলের কোনো অধিকার নেই জাতিসংঘে থাকার। জাতিসংঘের সব সংস্থা থেকে ইসরায়েলকে বহিষ্কার করে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া দরকার যে বিশ্বে এখনো মানুষ আছে, মনুষ্যত্ব আছে।

ফিলিস্তিনকে অবরুদ্ধ কারাগার হিসেবে উল্লেখ করে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সেই অবরুদ্ধ কারাগারে ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে। হিটলার যে নৃশংস গণহত্যা চালিয়েছিল, এখন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু একই কাজ করছেন।

জাতিসংঘের প্রতিনিধির কাছে চিঠি হস্তান্তরের পর অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘জাতিসংঘের সব প্রতিষ্ঠান থেকে বহিষ্কার এবং যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ইসরায়েলের বিচারের দাবি–সংবলিত স্মারকলিপি আমরা ঢাকার জাতিসংঘ কার্যালয়ের প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করেছি। তাঁরা কথা দিয়েছেন, জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে এটি পৌঁছাবেন, যা বৈশ্বিক সংহতিকে শক্তিশালী করবে।’

এর আগে সমাবেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, ফিলিস্তিনের মানুষদের ওপর ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনী দিনের পর দিন আক্রমণ চালাচ্ছে। অবিশ্বাস্যভাবে নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশ শিশু ও নারী। এটা বর্তমান সময়ে চিন্তা করাও কঠিন। তারপরও দিনের পর দিন সেটা অব্যাহত আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত সমর্থন দেওয়ার কারণে ইসরায়েল তা চলতে পারছে।

ফিলিস্তিন সংহতি কমিটি জাতিসংঘকে যে চিঠি দিয়েছে, সমাবেশে তার একটি বাংলা অনুলিপি পাঠ করেন কমিটির সদস্য ওমর তারেক চৌধুরী। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘অত্যন্ত হতাশা ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি, বিশ্বের সব স্বীকৃত সভ্য নিয়মকানুন ও রীতিকে পদদলিত করে ফিলিস্তিনের গাজার প্রায় ২৫ লাখ নারী–পুরুষ–শিশুর বিরুদ্ধে প্রায় ছয় মাস ধরে বিরামহীনভাবে গণহত্যা পরিচালিত করছে ইসরায়েল।’

চিঠিতে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের চিত্র তুলে ধরা হয়। বলা হয়, ‘ক্রমাগতভাবে জাতিসংঘের সনদ ও সিদ্ধান্তগুলোকে অমান্যকারী দেশ হিসেবে ইসরায়েলের জাতিসংঘের সব প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার ও সুযোগ নেই। তাই অবিলম্বে ইসরায়েলকে বহিষ্কারের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা আপনাদের মাধ্যমে নিরাপত্তা পরিষদ, সাধারণ পরিষদ ও সদস্যরাষ্ট্রগুলোর কাছে আহ্বান জানাই।’

সমাবেশ সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক হারুন–অর–রশিদ। এ সময় ফিলিস্তিন সংহতি কমিটির সদস্য আবদুল্লাহ আল ক্বাফী বক্তব্য দেন। এ আয়োজনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, কবি হাসান ফখরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এআর-২৫/৩/২৪

Share your comment :