পশ্চিমবঙ্গে ৩ আসনের ভোটে লড়াই হবে তৃণমূল-বিজেপিতে

পশ্চিমবঙ্গে ৩ আসনের ভোটে লড়াই হবে তৃণমূল-বিজেপিতে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ভারতে লোকসভা নির্বাচনে আগামী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় দফার ভোট। দ্বিতীয় দফায়ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে তিনটি আসনে ভোট হবে। আসন তিনটি হলো দার্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ও উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ।

২০১৯ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে এই তিন আসনেই জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির প্রার্থীরা। দার্জিলিং আসনে রাজু বিস্তা, বালুরঘাট আসনে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং রায়গঞ্জ আসনে দেবশ্রী চৌধুরী। দেবশ্রী চৌধুরী কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। এবার দেবশ্রীকে কলকাতা দক্ষিণ আসনে প্রার্থী দিয়েছে বিজেপি। রায়গঞ্জ আসনে এবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে কার্তিক পালকে।

২০১৯ সালের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং আসনে বিজেপির রাজু বিস্তা ৭ লাখ ৫০ হাজার ৬৭ ভোট, বালুরঘাটে সুকান্ত মজুমদার ৫ লাখ ৩৯ হাজার ৩১৭ ভোট এবং রায়গঞ্জে দেবশ্রী চৌধুরী ৫ লাখ ১১ হাজার ৬৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

এবারও এই তিন আসনে জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে বিজেপি। তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপির প্রার্থীরা বলছেন, এবার আর ভোটাররা তৃণমূলে ভোট দেবেন না। অবশ্য তৃণমূলের নেতারা বিজেপির এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই বাংলার মানুষ এখনো মমতার উন্নয়নের সঙ্গেই আছেন। তাঁরা ধর্মান্ধ বিজেপিকে বিশ্বাস করেন না। এবার আর তাঁরা বিজেপিকে ভোট দেবেন না।

দ্বিতীয় দফা ভোট অবাধ ও নির্বিঘ্ন করতে এবার ২৯৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের পাহারায় থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। থাকবে বিপুলসংখ্যক রাজ্য পুলিশও। দ্বিতীয় দফায় এই রাজ্যের তিনটি আসনে মূল লড়াই হবে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলেরই।

দার্জিলিং আসনে এবারও লড়ছেন বিজেপির বর্তমান সংসদ সদস্য রাজু বিস্তা, তৃণমূলের গোপাল লামা, কংগ্রেসের মুনীশ তামাংসহ স্থানীয় দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

বালুরঘাট আসনে লড়ছেন বিজেপির বর্তমান সংসদ সদস্য সুকান্ত মজুমদার, তৃণমূলের বিপ্লব মিত্র, বামফ্রন্টের আরএসপি দলের নেতা জয়দেব সিদ্ধান্ত এবং ছোটখাটো দল ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

রায়গঞ্জ আসনে লড়ছেন বিজেপির নতুন প্রার্থী কার্তিক পাল, তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণী, কংগ্রেসের আলী ইমরান রামজসহ কিছু ছোটখাটো দলের প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তৃণমূলের কৃষ্ণ কল্যাণী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন।

এবিপি আনন্দ ও সি-ভোরের এক সমীক্ষায় সম্প্রতি বলা হয়েছে, এই তিন আসনেই জয়ের সম্ভাবনা বেশি বিজেপির প্রার্থীদেরই। তবে বিজেপি ও তৃণমূলের এই লড়াইয়ে বিজেপি কোনো আসন হারালে আশ্চর্য হওয়ার কোনো কারণ থাকবে না।

ভারতের নির্বাচন কমিশন এই রাজ্যের ৪২টি আসনের ৩০টিকে সাধারণ শ্রেণিতে রেখেছে। ১০টি আসন রেখেছে তফসিল জাতি বা এসসি সম্প্রদায়ের জন্য। আর দুটি আসন রেখেছে তফসিল জনজাতি বা এসটি সম্প্রদায়ের জন্য।

সর্বশেষ গত সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের একটি রায়ে রাজ্যে ২০১৬ সালে নিয়োগ দেওয়া ২৫ হাজার ৭৫৩ শিক্ষক-কর্মীর চাকরি বাতিল করেছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগের কারণে চাকরি বাতিল করা হয়। এতে বেশ বড় ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল। আজ বুধবার অবশ্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার কলকাতা হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করছে।

তৃণমূলের অনেক নেতার বিরুদ্ধে ইডি-সিবিআইয়ের তল্লাশির মধ্যে হাইকোর্টের নিয়োগ বাতিলের এই রায় সামনের নির্বাচনে কিছুটা বেকায়দায় ফেলবে বিজেপিকে। ওই সব চাকরি যাঁদের প্রভাবে হয়েছে তাঁদের কেউ কেউ এখন কারাগারে।

দ্বিতীয় দফায় আগামী শুক্রবার ভারতজুড়ে মোট ৮৯ আসনে ভোট হবে। ১৯ এপ্রিল প্রথম দফায় ১০২ আসনে ভোট হয়।

এআর-২৪/০৪/২৪

Share your comment :