সংকট নিরসনে আর্থিক খাতে সংস্কার কার্যক্রম চলছে : ড. সালেহউদ্দিন
বাংলাকণ্ঠ রিপোর্ট:
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিগত শাসনামল থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া আর্থিক, পুঁজিবাজার ও ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন খাতের সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশ সচিবালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের তিন মাস পূর্তি উপলক্ষে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
শ্বেতপত্র কমিটি, অর্থনীতি পুনঃকৌশলীকরণ কমিটি এবং অন্যান্য কমিটি গঠন ও কার্যক্রম সম্পর্কে উপদেষ্টা বলেন, এসব খাতে সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে, অন্যথায় সংকট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আর্থিক খাত, ব্যাংকিং খাত এবং পুঁজিবাজার সংস্কার করা হচ্ছে।
পুঁজিবাজার সংস্কার নিয়ে তিনি বলেন, বাজারের প্রবণতা পর্যবেক্ষণ ও সিকিউরিটিজ ট্রেডিংয়ে হেরফের রোধে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ উৎসাহিত করার লক্ষ্যে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার বিক্রি থেকে ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধন লাভের ওপর কর হার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
করের হার কমানোর আগে পাঁচ বছরের মধ্যে যেকোন সময় লাভ হলে করদাতাদের ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধন লাভের ওপর ৩০ শতাংশ কর দিতে হতো। পুঁজিবাজার চাঙ্গা করতে আইসিবিকে ইতোমধ্যে ৩ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, এখন সংশোধনমূলক ব্যবস্থা চলছে। এগুলো সবই একটি বার্তা দেওয়ার জন্য করা না হলে আপনি সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবেন না।
উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকার বিষয়ে বলেন, ‘আমরা এডিপির অধীনে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও পর্যালোচনা করছি। প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় এবং উচ্চতর রিটার্নের হার রয়েছে- এমন প্রকল্পগুলো এখন একনেকে রাখা হচ্ছে। চলমান প্রকল্পগুলোও অব্যাহত থাকবে।’
সরকার ঋণ পরিশোধে চিন্তিত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার ব্যবহারে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে এবং নিজের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, বাজেটে আরও চাপ আসতে পারে, তবে বাজেট সংশোধনের সময় বিশেষ করে উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখে তা পর্যালোচনা করা হবে।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, এডিপিকে যতদূর সম্ভব ন্যায়সঙ্গত করা হবে। এটিকে বড় করা হবে না আবার এটি খুব ছোট করা হবে না। এডিপিকে খুব যৌক্তিক করা আমাদের সক্রিয় বিবেচনার মধ্যে রয়েছে।
পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চাঁদাবাজি, বাজারে কাঠামোগত কিছু সমস্যা থাকায় এক-দুই মাসে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা রমজানে ছোলা, মসুর ডাল, পেঁয়াজ, খেজুর এবং সয়াবিন তেল নিশ্চিত করছি। বিশ্ববাজারের কারণে চিনি, চাল এবং অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে।’
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মূল্যস্ফীতির একটি বড় কারণ আমদানিকৃত মূল্যস্ফীতি… তা সত্ত্বেও, আমরা আমদানিকৃত জিনিসের ওপর শুল্ক কমিয়েছি। টিসিবি প্রয়োজনে ট্রাক সেলের মাধ্যমে পরিধি বাড়াবে এবং আগামী ডিসেম্বর এবং তারপরও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকতে পারে।’
উপদেষ্টা বলেন, রমজানে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষে মূল্য স্থিতিশীল রাখতে ডিম উৎপাদনে প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশ্বস্ত করছি যে পবিত্র রমজান মাসে কোনো ঘাটতি হবে না।’
তিনি বলেন, বেসরকারি আমদানিকারকরা চাল আমদানি না করলে খাদ্য অধিদপ্তর নিজস্ব ব্যবস্থায় টিসিবি কর্তৃক সয়াবিন তেলসহ সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
এএ/
Share your comment :