পুঁজিবাজারে পুঁজিহারাদের আর্তনাদ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
দু’চারদিন স্বাভাবিক লেনদেনের পর আবার পতনের বৃত্তে ঘুরপাক খায় দেশের প্রধান পুঁজিবাজার। টানা সাত কার্যদিবস দরপতনের পর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললেও আজ সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার, শেয়ারবাজারে আবার দরপতন হয়েছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে দুই বাজারেই কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে।

এর আগে সাত কার্যদিবসের টানা পতনে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ১৯০ পয়েন্ট কমে যায়। পাশাপাশি দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে চলে যাওয়া লেনদেন সাতশ কোটি টাকার ঘরে নেমে আসে। এমন পতনের পর গত বৃহস্পতিবার ডিএসই’র প্রধান সূচক ১৭ পয়েন্ট বাড়ে।

এ পরিস্থিতিতে রোববার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসই’র প্রধান সূচক ১৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসই’র প্রধান সূচক ২৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে মূল্যসূচক কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৯৬টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২৪৩টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৫৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স ১৪ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ২৫৯ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৬২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮০৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮৬২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।

এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৯ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালসের ৩৪ কোটি ৪৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেমিনি সি ফুড।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ফরচুন সুজ, ফু-ওয়াং সিরামিকস, লাভেলো আইসক্রিম, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মুন্নু ফেব্রিক্স, ওরিয়ন ইনফিউশন এবং বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৪৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৮টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ২১ লাখ টাকা।

Share your comment :