ফের পতনের বৃত্তে শেয়ারবাজার

ফের পতনের বৃত্তে শেয়ারবাজার


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
টানা দরপতন দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। সেই সঙ্গে কমছে মূল্যসূচকও। পাশাপাশি লেনদেনের গাতিও কমে এসেছে। দেড় হাজার কোটি টাকার ওপরে উঠে যাওয়া লেনদেন এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে প্রায় তার তিনগুণের। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। ফলে দুই বাজারেই কমেছে মূল্যসূচক। এর মাধ্যমে টানা চার কার্যদিবস শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।

মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি দুই বাজারেই কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন কমে এক হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি চলে এসেছে। এর মাধ্যমে দুই কার্যদিবস দেড় হাজার কোটি টাকার কম লেনদেন হলো। এর আগে টানা ৮ কার্যদিবস দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়। সেই সঙ্গে টানা ১০ কার্যদিবস মূল্য সূচক বাড়ে।

বৃহস্পতিবার দিনের লেনদেন শেষে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমলেও এদিন লেনদেনের শুরুর চিত্র ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার মাধ্যমে লেনদেন শুরু হওয়ায় প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে যায়। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকায় লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়ে ৩৫ পয়েন্ট।

তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসতে থাকে। লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এই প্রবণতা আরও বাড়ে। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৯২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫০টির। আর ৫৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমলেও ৪টির শেয়ার দাম বেড়ে হল্টেড (একদিনে যতটা বাড়া সম্ভত ততোটাই বেড়েছে) হয়েছে।

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৫৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৮২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৭৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৯৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ৮৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেস্ট হোল্ডিংয়ের ৭৩ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩১ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আফতাব অটোমোবাইল।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ফু-ওয়াং সিরামিক, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, সিকদার ইন্স্যুরেন্স, এবি ব্যাংক, এবং আইটিসি।

অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১০৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৫৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৮টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৪ কোটি ২২ লাখ টাকা।

Share your comment :