ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল: ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ঘটনায় ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া এখন নীতিগত স্পষ্ট রূপ পেয়েছে। আর সেই প্রতিশোধের আগুনে ঘি ঢেলেছেন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
বুধবার ইসরায়েল সফরে গিয়ে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইসরায়েল ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার ঘটনায় ইরানের বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে কঠিন প্রতিশোধ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।ইসরায়েলের এমন অবস্থানকে আঞ্চলিক উত্তেজনায় আরেক দফার সংঘাতের বিষয়ে সবচেয়ে বড় সতর্কবার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এর আগে, গত শনিবার রাতে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রথমবারের মতো সরাসরি হামলা চালায় ইরান। ওই হামলায় শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। ইরানের হামলার পর বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের বিস্তার ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর চেষ্টা করছে।
গত ১ এপ্রিল দামেস্কে ইরানের একটি কূটনৈতিক ভবনে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলে হামলা চালায় ইরান। ওই দিন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনা ও ঘাঁটি লক্ষ্য করে শত শত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানের সামরিক বাহিনী।
ইরানের এই হামলার ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে তুমুল উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, তারা ইরানে পাল্টা হামলা করবে। ইসরায়েল এবং ইরান-সমর্থিত ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের মাঝে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। কূটনীতিকরা ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধ এড়ানোর উপায় খুঁজছেন।
শনিবার ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনের বেশিরভাগই ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ধ্বংস করেছে। এই হামলায় প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে ইসরায়েলের কয়েকটি সামরিক ঘাঁটিতে হালকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, প্রতিরোধকারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষায় অবশ্যই প্রতিশোধ নেবে তেলআবিব। আর ইরান বলেছে, তারা বিষয়টিকে এখানেই শেষ বলে মনে করে। এছাড়া ইসরায়েল পাল্টা হামলা চালালে ইরান আবারও প্রতিশোধ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
বুধবার সকালের দিকে জেরুজালেম সফরের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ক্যামেরন বলেছেন, ‘‘এটা পরিষ্কার যে ইসরায়েলিরা প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা আশা করছি, তারা এই প্রতিশোধ এমনভাবে নেবে যাতে উত্তেজনা বেশি না বাড়ে।’’
ইরানের বিরুদ্ধে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলকে সীমিত পরিসরে প্রতিশোধ নেওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে বলে মনে করছে ওয়াশিংটন এবং পশ্চিমা বিশ্বের অন্যান্য দেশের সরকার। ক্যামেরন বলেন, ব্রিটেন ইরানের বিরুদ্ধে সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা দেখতে চায়। গ্রুপ অব সেভেন বিশাল গণতন্ত্র; যারা এই সপ্তাহে ইতালিতে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। এই বৈঠক থেকে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা আসতে পারে।
তিনি বলেন, ইরানকে জি-৭ গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট দ্ব্যর্থহীন বার্তা দেওয়া দরকার।
সূত্র: রয়টার্স
এআর-১৭/০৪/২৪
Share your comment :