সিলেটে পুলিশ-শিক্ষার্থী দফায় দফায় সংঘর্ষ, টিয়ারগ্যাস-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ

সিলেটে পুলিশ-শিক্ষার্থী দফায় দফায় সংঘর্ষ, টিয়ারগ্যাস-সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ


বাংলাকণ্ঠ রিপোর্ট:
সিলেটে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এতে শিক্ষার্থীদের সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে দিয়েছে ছত্রভঙ্গ করছে পুলিশ।তবে শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে প্রতিরোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা জানা যায়নি।

শুক্রবার (০২ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টা নাগাদ থেকে সিলেটের আখালিয়া, মদিনা মার্কেট ও পাঠানটুলা এলাকায় এসব সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এর আগে সারা দেশে ডাকা ছাত্র-জনতার গণমিছিলে যোগ দিতে শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সামনে সিলেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকেন। এতে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঁচ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এসময় সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘হামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘মামলা করে আন্দোলন, বন্ধ করা যাবে না’, ‘ভাইয়ের ওপর হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই, ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন? প্রশাসন জবাব চাই’, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘জেগেছে রে জেগেছে , ছাত্র সমাজ জেগেছে’,‘লেগেছে রে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে’ ইত্যাদি।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার বেলা সাড়ে ৩টায় শাবিপ্রবির প্রধান ফটক থেকে একটি গণমিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি সিলেটের আখালিয়ায় মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সামনে এলে আনুমানিক বেলা ৪টার দিকে পুলিশ পেছন থেকে টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় শিক্ষার্থীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের হাতে ইট-পাটকেল ও লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে অবস্থান করতে দেখা গেছে।
পরে হাসপাতালের আশপাশের বাসা-বাড়িতে তল্লাশি চালায় পুলিশভ এসময় ৩-৪ জনকে আটক করে এপিসি কারে তোলা হয়।
এসময় মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ হাসপাতালের ভেতরে গা ঢাকা দেওয়া আন্দোলনকারীদের বের করে দিতে আহ্বান জানান।
অন্যথায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাউকে পেলে হাসপাতালের লোকজনও মামলার আসামি হবেন। এসময় এক নারী এগিয়ে এসে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়।
এদিকে, পরিস্থিতি খানিকটা নিয়ন্ত্রণে এলে ফের বাসা-বাড়িতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশকে নারীদের তোপের মুখে পড়ে ফিরে আসতে হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়। বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সংঘর্ষের জেরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নগরের বিভিন্ন এলাকায় সেনা, বিজিবি ও পুলিশ মোতায়েন থাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও মানুষের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অন্যদিকে, প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে চলমান এ সংঘর্ষে পুলিশ ৪০-৫০ রাউন্ডের বেশি টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে বলে জানা গেছে। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলমান রয়েছে।ঘটনার বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ফারদিন জানান, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আজকে কর্মসূচি পালন করছি। পুলিশ পেছন থেকে আমাদেরকে টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) পুলিশ তপোধন এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ব্লক রেইড দিয়েছে। অনেক নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে তারা হয়রানি করছে। আমাদের ওপর যতই অত্যাচার করা হোক না কেন আমরা ৯ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।
ঘটনার বিষয়ে জানতে সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আসবাহার আলী শেখ ও জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে কয়েকবার ফোন করা হলে তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এএ/

Share your comment :