বিকেকেবি’র জন্য মতিঝিলে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করবে সরকার

বিকেকেবি’র জন্য মতিঝিলে বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করবে সরকার

বাংলাকণ্ঠ রিপোর্ট:
সরকারি কর্মচারীদের কল্যাণে বিভিন্ন সেবা প্রদান ও তাদের উন্নয়নে সচেষ্ট থাকতে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (বিকেকেবি) বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বিকেকেবি’র জন্য একটি আধুনিক, সুবিধা সম্পন্ন ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার।
যার উদ্দেশ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি উন্নত পরিবেশ সৃষ্টি করা। এজন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (বিকেকেবি) ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে।
এই প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য হলো একটি আধুনিক বাণিজ্যিক ভবন তৈরি করা, যা শুধু কর্মচারীদের কল্যাণে কাজ করবে না, বরং রাষ্ট্রীয় উন্নয়নে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।
পরিকল্পনা কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ১৩ নভেম্বর পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সচিব সোলেমান খান সভাপতিত্বে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) মিটিং অনুষ্ঠিত হয়।
এই মিটিংয়ে নকশা ও ডিজাইন পুনর্গঠিত ডিপিপিতে সংযুক্ত করাসহ বেশ ি পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এসব পর্যবেক্ষণ সংশ্লিষ্ট বিভাগ ঠিক করে দিলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
সবকিছু ঠিক থাকলে পুলিশ অধিদপ্তর আগামী তিন বছর (জুলাই ২০২৪ থেকে জুন ২০২৭) মেয়াদে প্রায় ১৮২ কোটি ৭০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন করবে, যা পুরোপুরি সরকারের বাজেটের মাধ্যমে অর্থায়ন করা হবে। ভবনটি ঢাকা শহরের কেন্দ্রস্থল মতিঝিল এজিবি কলোনিতে নির্মাণ করা হবে। যেখানে প্রায় ২৮.৭৪ কাঠা (৪০.৮২ শতাংশ) জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রকল্পটিতে একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন হবে, যার মোট ১৫টি তলা থাকবে এবং এর মধ্যে ৩টি বেজমেন্ট এবং ১টি সেমি-বেজমেন্ট থাকবে। ভবনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা রাখা হবে, যেমন অফিস স্পেস, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গেস্ট হাউজ, কমিউনিটি সেন্টার, রুফটপ রেস্টুরেন্ট এবং অন্যান্য আধুনিক সুবিধা। এতে ৭০টি গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা থাকবে এবং ভবনের সকল ফ্লোরে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, প্রাকৃতিক আলো ও বাতাসের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে।
নতুন ভবনটি শুধু বিকেকেবি’র কাজের ক্ষেত্রই সম্প্রসারণ করবে না, বরং সরকারি কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ, সেবা প্রদান এবং অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য একটি আধুনিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। এতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, বিশেষ করে নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ভবনের ১৩ তলায় একটি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকবে, যেখানে নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সহায়তা করা হবে।
এছাড়া, ভবনের ১৪ তলা ও ১৫ তলার কিছু কার্যক্রমে সংশোধন আনা হয়েছে। ১৪ তলায় গেস্ট হাউজ ও কনফারেন্স কাম-মাল্টিপারপাস হল রাখার প্রস্তাবনা থাকলেও সেগুলো নিয়ে কিছু উদ্বেগ ছিল। গেস্ট হাউজের জন্য অতিরিক্ত জনবল প্রয়োজন এবং তা ব্যয়বহুল হতে পারে বলে মতামত জানানো হয়। এর ফলে গেস্ট হাউজের ব্যবস্থা বাদ দিয়ে কনফারেন্স রুম এবং অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য তলা রাখা হবে। ১৫ তলায় কমিউনিটি সেন্টার, রুফটপ রেস্টুরেন্ট এবং ছাদ বাগান রাখা হবে, যেখানে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠন আয়োজন করা সম্ভব হবে।
এই ভবনটি শুধুমাত্র একটি কর্মচারী কল্যাণ প্রকল্প নয়, বরং একটি আধুনিক বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে সরকারি ব্যবস্থাপনা এবং নাগরিক সেবার একটি আদর্শ স্থাপনা হবে। এতে ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা, আধুনিক অগ্নিনর্বাপন ব্যবস্থা, এবং সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা থাকবে, যা ভবনের কর্মরত জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড একটি আধুনিক, সুবিধাযুক্ত এবং পরিবেশবান্ধব ভবন নির্মাণের মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের নাগরিক সেবা ব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করবে।
এএ/

Share your comment :