শাস্তি পেলেন জাবির ২২৯ শিক্ষার্থী
- আমিরুল ইসলাম
- প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৩:১১ PM , আপডেট: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ০৩:৩৯ PM

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় ১৪ থেকে ১৭ জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) অধ্যায়নরত ৬৪ শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পাশাপাশি, অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী আরও ৪৬ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ৭৩ জন সাবেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাসনদ স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) রাত সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভা শেষে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, হামলায় মোট ২২৯ জন শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে ১৩০ জন বর্তমান এবং ৯৯ জন সাবেক শিক্ষার্থী। বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৪ জনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে ২ বছরের, ৮ জনকে ১ বছরের জন্য ও ১ জনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
উপাচার্য আরও জানান, হামলায় বহিরাগত সন্ত্রাসী এবং পুলিশ সদস্যদের সম্পৃক্ততাও তদন্তে উঠে এসেছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের বাইরে হওয়ায় এদের বিচারের জন্য তদন্ত প্রতিবেদন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হবে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ৪০ জন শিক্ষার্থীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০ জন বর্তমান এবং ২০ জন সাবেক শিক্ষার্থী।
কেন অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে—এ প্রশ্নে উপাচার্য বিস্তারিত মন্তব্য না করলেও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুর রব জানান, যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রমাণ মেলেনি। ভিডিও ফুটেজেও তাদের সম্পৃক্ততার কোনো সূত্র পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এসব শিক্ষার্থী গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় সরাসরি অংশ নেয়। শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উপাচার্য।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সময় রাতের আধারে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। বাধ্য হয়ে তৎকালীন উপাচার্যের বাসভবনে আশ্রয় নেয় শিক্ষার্থীরা। কিন্তু সেখানেও হামলা চালায় শেখ হাসিনার সন্ত্রসী বাহিনী। এতে অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। ভয়াল সেই রাতের ঘটনা সেখানে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের আজও তাড়িয়ে বেড়ায়।