ডাকসু'র ভিপি প্রার্থী আটক
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১১:১১ AM , আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০২৫, ১১:১১ AM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলে রুমমেটকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে ডাকসু ভিপি পদপ্রার্থী জালাল আহমদ জালালকে হল থেকে বহিষ্কার করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ ওঠার পর জালাল নিজের কক্ষে নিজেকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। রাত ১টার দিকে হলের শিক্ষার্থীরা তার দরজার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অবরুদ্ধ অবস্থায় কয়েক ঘণ্টা কাটানোর পর রাত আড়াইটার দিকে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তাকে কক্ষ থেকে বের করে এনে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়।
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, "একজন শিক্ষার্থীর ওপর এ ধরনের নৃশংস আক্রমণের অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর। তাই তাৎক্ষণিকভাবে জালালকে হল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে তার ছাত্রত্ব বাতিলের সুপারিশ করা হবে।" এ ঘটনায় রমনা থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
আহত শিক্ষার্থীর বক্তব্য ও জালালের পাল্টা অভিযোগপ্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুযায়ী, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৪৬২ নম্বর কক্ষে এই হামলা হয়। ভিপি প্রার্থী জালাল তার রুমমেট রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী রবিউল হককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর জখম হন। আহত রবিউলকে দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতাল থেকে রবিউল জানান, তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় জালাল ঘরে ঢুকে লাইট জ্বালিয়ে শব্দ করতে শুরু করেন। প্রতিবাদ জানালে জালাল ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করেন। রবিউল বলেন, "আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই রক্তাক্ত হয়ে যাই।"
অন্যদিকে, অভিযুক্ত জালাল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে দাবি করেন, আসলে তিনিই হামলার শিকার। তার ভাষ্য, তিনি রুমে বসে হলে অবৈধভাবে থাকা বহিরাগতদের উচ্ছেদের জন্য উকিল নোটিশ প্রস্তুত করছিলেন। সেই সময় রুমমেট রবিউল তার ওপর হামলা চালান। পোস্টে তিনি নিজেকে আহত প্রমাণ করতে কয়েকটি ছবিও প্রকাশ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, এ ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে জালালের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান—"এই ঘটনায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।"
ডাকসু নির্বাচনের মাত্র কয়েকদিন আগে এ ধরনের সহিংস ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়েছে।