চাকসু নির্বাচন নিয়ে একাধিক অভিযোগ
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৮ PM , আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৮ PM
-11552.jpg)
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব ও প্রশাসনের ‘একপেশে আচরণের’ অভিযোগ তুলেছে দুটি প্যানেল। তারা এ ঘটনায় তদন্ত ও বিচার দাবি করেছে।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পৃথক সংবাদ সম্মেলনে বামপন্থী শিক্ষার্থীদের প্যানেল ‘বৈচিত্র্যের ঐক্য’ এবং সুফিবাদী আদর্শে বিশ্বাসী ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল এসব অভিযোগ উত্থাপন করে।
বৈচিত্র্যের ঐক্য প্যানেলের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ভিপি) প্রার্থী ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, “৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হতে পারত। কিন্তু দুপুরের পর থেকে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তাতে নির্বাচন কলঙ্কিত হয়েছে। ভোটে ব্যবহৃত কালি অমোচনীয় ছিল না—কিছু সময় পর তা মুছে যাচ্ছিল। অনেক কেন্দ্রে ভোটারদের স্বাক্ষরও নেওয়া হয়নি, যার ফলে একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিতে পেরেছেন। এতে বোঝা যায়, নির্বাচন কমিশন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে চেয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ধ্রুব আরও বলেন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ৩৫৩ নম্বর কক্ষে একই আইডি দিয়ে দুবার ভোট দেওয়া হয়েছে। নতুন কলা ভবনের একটি কক্ষে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। একই ভবনের এলইডি ডিসপ্লে ভাঙচুর ও ভোট গণনার সময় পোলিং এজেন্টদের হুমকি দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ফরহাদুল ইসলাম প্রশাসনের একপেশে আচরণ ও অনিয়মের আটটি অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে আমরা বিষয়গুলো জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। আইটি ভবনের ২১৪ নম্বর কক্ষে ২০টি স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপার বাক্সে ঢোকানো হয়েছে। পানি দিলেই মুছে যাচ্ছে অমোচনীয় কালি- এটা প্রশাসনের গাফিলতি। অনেক ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের স্বাক্ষরও নেওয়া হয়নি।
তার দাবি, নির্দিষ্ট প্যানেলের লিফলেট ভোটকেন্দ্রের সামনে রেখে ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়েছে, আবার অনেক প্রার্থী ভোটকেন্দ্রের কাছে গিয়ে ভোটারদের কাছে ব্যালট নম্বর লিখে দিয়েছেন। আমাদের প্যানেলের পর্যবেক্ষকদের কোনো কার্ড দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা একটি বিশেষ পক্ষের হয়ে কাজ করেছেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকে নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। প্রশাসন সেটা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে, যা রহস্যজনক। ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচন একটি নতুন প্রজন্মের আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের ব্যর্থতা ও অদূরদর্শিতার কারণে সেই আনন্দের আমেজ শিক্ষার্থীরা অনুভব করতে পারেননি।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলে। এবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।
এবার চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়ছেন ৪৯৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন।