ডাকসুর টাকা নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে

প্রায় ৩০ বছর ধরে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে আসলেও সেই টাকা ফান্ডে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে ডাকসু নেতারা প্রশ্ন তুললে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম জানান, এখন পর্যন্ত তারা মোট ১ কোটি ১১ লাখ টাকা পেয়েছেন, তবে ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

রবিবার (২৬ অক্টোবর) তিন দফা দাবিতে রেজিস্ট্রার ভবন ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে ডাকসু নেতাদের প্রশ্নের জবাবে কোষাধ্যক্ষ এই তথ্য দেন।

হল সংসদ এবং ডাকসুর অতীতের সব ফান্ডের হিসাব দিয়ে বাজেট বুঝিয়ে দেওয়া এবং নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনে টোকাই, ভবঘুরে, মাদকমুক্ত করাসহ তিন দফা দাবিতে গতকাল ডাকসু নেতারা ঢাবির রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করেন। এ সময় ডাকসুর ফান্ডের টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে—জানতে চাইলে কোষাধ্যক্ষ ডাকসু নেতাদের বলেন, যে নির্বাচন হয়, সে খাতে এ টাকা খরচ হয়েছে। তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থী ও নেতারা বলেন, এ টাকা তো এভাবে খরচ করা যাবে না। এ টাকা খরচ করবে ডাকসু। এ সময় কোষাধ্যক্ষ আরও বলেন, টাকা-সংক্রান্ত বিষয়গুলো পলিসি পর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়। ডাকসুর আয় আলাদা কিছু না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক আয়ের অংশ আছে। ইউজিসি একটি বরাদ্দ দেয়। সে টাকার মধ্যেই এ ফিও অন্তর্ভুক্ত। ইউজিসি যেভাবে যে ফরম্যাটে বাজেট দেয়, সেভাবে খরচ করা হয়।

তার বক্তব্যের জবাবে ডাকসু নেতারা বলেন, এসব পলিসি আমরা বুঝি না। ডাকসুর টাকা বুঝিয়ে দিতে হবে। পরে কোষাধ্যক্ষ বলেন, বাজেটের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্বাধীনতা নেই। আয় খুব কম। সরকারি বাজেটের ওপর নির্ভর করতে হয়। ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা চাইলেও ৯০০ কোটির কিছু বেশি দিয়েছে। খরচ কমালেও ১০০ কোটি ঘাটতি হবে। তারা বলেছে, আয় বৃদ্ধি করতে।

তখন আন্দোলনকারীরা বলেন, শিক্ষার্থীরা ডাকসুর জন্য যে টাকা দিয়েছে, সে টাকা দিতে হবে। এ টাকা অন্য কাজে কেন যাবে, ডাকসুর টাকা দিতে হবে। এ সময় বিষয়টি নিয়ে ইউজিসির সঙ্গে কথা বলতে হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে গতকাল দুপুরের দিকে ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক যুবাইর বিন নেছারী, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদের নেতৃত্বে রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ঘেরাও করেন নেতারা। কর্মসূচির একপর্যায়ে তারা তিন দাবি নিয়ে কোষাধ্যক্ষের অফিসে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরের উপস্থিতিতে তাদের অবস্থান কর্মসূচিকে ঘিরে বাকবিতণ্ডা হতে দেখা যায়।