মুরাদনগরের ‘আল্লাহু চত্বর’ রণক্ষেত্র
- কুমিল্লা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩০ জুলাই ২০২৫, ১১:০৯ PM , আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৫, ০১:০৩ AM

কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা। একের পর এক হামলা-মামলা ও সংঘর্ষের জেরে মানুষ খুন হওয়ার পরেও যেন শান্তি অধরা সেখানে। এরই জের ধরে এবার বুধবার রাতে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিবের অনুসারীদের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় উপজেলা সদর যেন কার্যত রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার বিকালে ‘মুরাদনগরের সর্বস্তরের জনতা’ ব্যানারে আসিফ মাহমুদের সমর্থকরা বিক্ষোভ সমাবেশের জন্য জমায়েত হন। একই সময়ে ওই স্থানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ সমর্থিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেন। এ সময় আসিফ মাহমুদের পক্ষের সমাবেশ লক্ষ্য করে পার্শ্ববর্তী জেলা পরিষদের মার্কেট থেকে ইট-পাটকেল ছোঁড়া হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এতে আসিফ মাহমুদের পক্ষের অন্তত ১০-১২ জন সমর্থক আহত হন। তবে তাদের দাবি, অন্তত ৫০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, আসিফ মাহমুদের সমর্থকদের হামলায় তাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মুরাদনগর উপজেলার সাবেক আহ্বায়ক ওবায়দুল হকের অভিযোগ, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া উপদেষ্টা হওয়ার পর থেকে তার বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা কায়কোবাদের লোকজন অপপ্রচার ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছেন। মুরাদনগরের যেকোনো ঘটনায় তারা আসিফ মাহমুদের নামে চালিয়ে দেয়। এসব প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে আমরা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ‘সর্বস্তরের মুরাদনগরবাসী’ ব্যানারে একটি প্রতিবাদ মিছিল শুরু করি। এর মধ্যে তারা আমাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে অন্তত ৫০ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন।
এদিকে মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন বলেন, ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ প্রোগ্রাম ছিল। তিন দিন আগে জানিয়ে দিয়েছিলাম। আমরা যেখানেই প্রোগ্রাম দেই আসিফ মাহমুদের লোকজন কাউন্টার প্রোগ্রাম দেন। আসিফ মাহমুদের লোকজন যেদিকে মিছিল করছিল, সেখান থেকেই ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। তারা নানা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে মিছিল শুরু করে।
মুরাদনগর উপজেলা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা আমিন কাদের খান বলেন, বিকালে এনসিপির (আসিফ মাহমুদের সমর্থক) সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ চলছিল। এ সময় পাশে অবস্থান করা কিছু লোক বিনা উস্কানিতে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।