সেনবাগে আওয়ামী দোসরের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার সম্পত্তি দখলের অভিযোগ 

দোসর
  © সংগৃহীত

নোয়াখালীর সেনবাগে পতিত আওয়ামী লীগের দোসর ও ভূমিদস্যু কতৃর্ক জোর পূর্বক একটি দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে। মূলত চিহ্নিত আওয়ামীলীগের দোসর ভূমিদস্যু সফি উল্লাহ এবং তার দুই ছেলে শরাফ উদ্দিন ও আফাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে উপজেলার নবীপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে ওয়াজি উল্লাহ আল কোরআন হেফজ মাদ্রাসার সম্পত্তির অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

সরেজমিনে জানা গেছে, উক্ত এলাকার চিহৃিত আওয়ামী দোসর সফি উল্লাহ চক্রটি এলাকায় এবং ঢাকায় নানা রকম অপরাধের সাথে জড়িত রয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া গেছে। মাদরাসার জায়গা দখল নিয়ে হুমায়ুন কবির নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি ভূমিদস্যু উক্ত তিন জনকে বিবাদী করে সেনবাগ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ব্যাপারে গত ২৪ ডিসেম্বর উক্ত মাদ্রাসার জায়গা রক্ষার্থে আদালতের নির্দেশনাও জারী করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ ডিসেম্বর সফি উল্যাহ মাদ্রাসার জায়গায় জোর পূর্বক দখলে করে বাউন্ডারী দেয়াল নির্মাণ করেন। এমতাবস্থায় হুমায়ুন কবির বাধা প্রদান করলে দখলদার সফি উল্লাহ ও তার সহযোগীরা তাকে মারতে আসেন। এক প্রর্যায়ে সফি এবং তার ছেলেরা হুমায়ূন কবির কে মেরে ফেলারও হুমকি দেন। 

এ ব্যাপারে হুমায়ুন কবির জানান, মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের জরুরী প্রয়োজনে তার আমেরিকা প্রবাসী মোতাহার হোসেন সোয়া শতাংশ জায়গা ক্রয় করেন। কিন্তু তিনি প্রবাসে থাকায় তার সকল সম্পত্তির রক্ষনাবেক্ষন ও দেখাশুনার জন্য হুমায়ুন কবিরকে আইনি ভাবে দায়িত্ব প্রদান করেন। মোতাহার হোসেন কোরআন শিক্ষা বিস্তারের জন্য এলাকায় একজন দানশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তিনি মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের জরুরী প্রয়োজনে এই জায়গাটি ক্রয় করেন। ২০২২ সালের ১৬ ডিসেম্বর উক্ত জায়গা ক্রয় করার পর থেকে একই বাড়ীর সফি উল্লাহ নানা রকম ঝামেলা সৃষ্টি করে চলেছে। নিরুপায় হয়ে হুমায়ুন কবির স্থানীয়ভাবে সলিশ মিমাংসা করার বহু চেষ্টা করেন।

কিন্তু সফি উল্লাহ স্থানীয় সলিশ মিমাংসা না মেনে তার ছেলেদের প্রভাব খাটিয়ে  হুমায়ুন কবিরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জায়গাটি জোর করে দখল করার চেষ্টা করে। পরে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে গত ১৭ ডিসেম্বর সেনবাগ থানায় এদের নামে অভিযোগ প্রদান করেন। তারপরও সফি উল্লাহ উক্ত জায়গায় কাজ করার চেষ্টা করায় হুমায়ুন কবির বাধ্য হয়ে গত ২৪ ডিসেম্বর নোয়াখালীর আদালত থেকে স্থিতাবস্থা জারি করান।

অভিযোগের দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনবাগ থাকার এসআই মোহন কৃঞ্চ দাস জানান, তিনি যখন ১৮ ডিসেম্বর সরেজমিনে তদন্তে যান, তখন তার উপস্থিতিতেই হুমায়ুন কবিরকে সফি উল্লাহ ও তার সহযোগীরা মারতে আসে। এ সময় সফি উল্লাহর ছেলে শরাফ উদ্দিন মোবাইলে কল দিয়েও তার সাথে উদ্বত আচরন করে। এ অবস্থায় ২০ ডিসেম্বর মাদ্রাসার জায়গাটি নিয়ে থানায় বসার কথা থাকলেও বিবাদী পক্ষ সফি উল্লাহ ও তার ছেলেরা না আসায় কোনো সূরাহা হয়নি। 

অপরদিকে সফি উল্লাহ দাবী করেন, তিনিও এই জায়গা ক্রয় করেন। তার কাছে দলিল রয়েছে। কিন্তু সফি উল্লাহ যার কাছ থেকে জায়গাটি ক্রয় করেছিলেন তিনি উক্ত স্থানে সমপরিমাণ জায়গার মালিক ছিলেন না। ঢাকায় অবস্থান করা সফি উল্লার ছেলে শরাফ উদ্দিনের প্রভাব দেখিয়ে তিনি সব ক্ষেত্রে জোর জুলুম করার চেষ্টা করে আসছেন।

আওয়ামীলীগের আমলে ঢাকার মিরপুরে তার ছেলে শরাফ উদ্দিনে বিরুদ্ধেও সামছুজ্জামান ইব্রাহিম নামে এক শিক্ষকের স্কুল দখলসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেখানে শরাফ উদ্দিনের নামে মিরপুর থানায়ও কয়েকটি অভিযোগ আছে। ঢাকায় অবস্থান করা সফি উল্লার ছেলের প্রভাব দেখিয়ে তিনি সব ক্ষেত্রে জোর জুলুম করার চেষ্টা করে। শরাফ উদ্দিন মিরপুরে ১০ নং ওয়ার্ড কমিশনার আওয়ামীলীগ নেতা মানিকের সহযোগী ছিল।


মন্তব্য