সেই ফ্লাইট এক্সপার্টের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার ৩

ফ্লাইট এক্সপার্ট
  © সংগৃহীত

গ্রাহক ও এজেন্টের প্রায় দেড়শো কোটি টাকা নিয়ে বিদেশে পাড়ি জমানো সেই অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় সংস্থাটির তিন কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার (৩ আগস্ট) মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ফ্লাইট এক্সপার্ট ইস্যুতে মতিঝিল থানায় ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এরা হলেন- এমডি সালমান বিন রশিদ শাহ সায়েম (১), এমডির বাবা এম এ রশিদ শাহ সম্রাট (২), হেড অব ফিন্যান্স মো. সাকিব হোসেন (৩), চিফ কমার্শিয়াল সাইদ আহমেদ (৪) ও  চিফ অপারেটিং অফিসার এ কে এম সাদাত হোসেন (৫)।

এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলেন-এজেন্সির হেড অব ফাইনান্স সাকিব হোসেন (৩২), চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সাইদ আহমেদ (৪০) ও চিফ অপারেটিং অফিসার এ কে এম সাদাত হোসেন (৩২)।

তবে এক্ষেত্রেও সেই রীতিতে চলছে ব্যবস্থা গ্রহণ। ঘটনার মূল হোতা ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে আর ধরা পড়ে কর্মীরা। 

বিপুল সরকার নামে এক গ্রাহক গতরাতে (শনিবার) মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন জানিয়ে ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় এরই মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
 
এর আগে শনিবার (২ আগস্ট) ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়েবসাইট হঠাৎই বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন হাজারো গ্রাহক ও টিকিট বিক্রেতা এজেন্সি, যারা অগ্রিম টিকিট বুকিংয়ের জন্য অর্থ পরিশোধ করেছিলেন। ফ্লাইট এক্সপার্টের একাধিক কর্মকর্তার অভিযোগ, প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে মালিকপক্ষ দেশ ছেড়েছে। এতে গ্রাহক ও সরবরাহকারীদের কোটি কোটি টাকা ফেরত পাওয়া অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
 
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০১৬ সালের মার্চ মাস থেকে কার্যক্রম শুরু করে ফ্লাইট এক্সপার্ট। তখন একটি লঞ্চ ইভেন্টের মাধ্যমে তাদের প্ল্যাটফর্ম চালু করে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এটি খুব দ্রুত বাংলাদেশের অনলাইন ট্রাভেল ইন্ডাস্ট্রিতে প্রভাবশালী নাম হয়ে ওঠে। তখন তারা দেশের ফ্লাইট টিকেটিং শিল্পে একটি বড় জায়গা দখল করে নেয়।
 
দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, ট্যুর প্যাকেজ এবং ভিসা প্রক্রিয়াকরণের মতো নানা ধরনের সেবা দিত ফ্লাইট এক্সপার্ট। বিশেষ করে সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইট টিকিট বুক করার সহজ সুবিধার কারণে এটি গ্রাহকদের কাছে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করে।

এদিকে ফ্লাইট এ্রক্সপার্টের মূল মালিক এম এ রশিদ শাহ সম্রাটের বিরুদ্ধে ওমরার নামে মানব পাচারের অভিযোগ বহু পুরানো। তার মালিকাধীন প্রতিষ্ঠান মক্কা হজ্ব গ্রুপের বিরুদ্ধে ওমরার নামে 'নো ব্যাক প্যাকেজ' চুক্তিতে মানব পাচারের অভিযোগে সরকার শাস্তিমুলক ব্যবস্থাও নিয়েছিল। কিন্তু পুরানো অভ্যাস বদলিয়ে এবার সে এবং তার ছেলে সালমান বিন রশিদ শাহ সাইম গ্রাহকের কমপক্ষে দেড়শ কোটি টাকা মেরে লাপাত্তা হয়ে যান। 

তার এমন কর্মকান্ডে একাধিক এজেন্সি মালিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। মক্কা গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ রশিদ শাহ সম্রাট এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ'র (আটাব) বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা। এ ব্যাপারে আটাবের নিরব ভূমিকাকেও দুষছেন এজেন্সি মালিকদের অনেকেই।


মন্তব্য