অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগ: ঘুরে দাঁড়াল মোংলা বন্দর
- বাংলাকণ্ঠ ডেস্ক:
- প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৭ PM , আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৩ PM
-11033.jpg)
২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর মোংলা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি নিট মুনাফা অর্জন করেছে। এক সময়ের প্রায় অকার্যকর এ বন্দর এখন লাভজনক প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়ে প্রতি বছর রেকর্ড সংখ্যক জাহাজ গ্রহণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টায় মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান।
তিনি জানান, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরের নিট মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। তবে নিট মুনাফা অর্জিত হয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি।
এছাড়া, এ অর্থবছরে ৮০০টি জাহাজ আগমনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে মোংলা বন্দরে ৮৩০টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এসেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩০টি এবং তিন দশমিক ৭৫ শতাংশ বেশি।
কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন। বাস্তবে হ্যান্ডলিং হয়েছে ১০৪ লাখ ১২ হাজার মেট্রিক টন, যা ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।
কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের ক্ষেত্রেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে মোংলা বন্দর। ২০ হাজার টিইইউ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে হ্যান্ডলিং হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউজ, যা সাত দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি।
রাজস্ব আয়েও লক্ষ্য ছাড়িয়েছে বন্দর। এ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৩৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা, অর্জিত হয়েছে ৩৪৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। ফলে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং দুই দশমিক ৮৩ শতাংশ বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, 'বন্দর পরিচালনার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে স্টেকহোল্ডার, শিপিং এজেন্ট, সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট, স্টিভেডরসহ সংশ্লিষ্টদের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় এই সফলতা এসেছে।'
অভ্যন্তরীণ ব্যবসা উন্নয়ন স্থায়ী কমিটি গঠন করায় জাহাজ আগমনও বেড়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানান, বন্দরে কোনো জাহাজজট নেই। কনটেইনার খালাসে টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম ১.৬৬/৪০ ঘণ্টা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ৩.৩৭/৭৮ ঘণ্টা। গাড়ি আমদানিকারকদের জন্য বিশেষ সুবিধা রয়েছে, রয়েছে সাতটি টি-ইয়ার্ড। বন্দরে বর্তমানে ৩৮টি সহায়ক জলযান বিদ্যমান।
নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইএসপিএস কোড মেনে চলা, কোস্টগার্ডের নিয়মিত টহল ও নিরাপদ সড়ক ও নৌপথে মাল পরিবহনের সুবিধাও রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বন্দরের ১৪৪ কিলোমিটার চ্যানেলে লাইটেড বয়া ও লাইট টাওয়ার স্থাপনের মাধ্যমে দিনরাত নির্বিঘ্নে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিদেশি জাহাজের জন্য রয়েছে ৪৯টি বার্থিং পয়েন্ট।
এ বিষয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মো. মাকরুজ্জামান বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। ইতিমধ্যে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বন্দর পরিদর্শন করে কার্যক্রম বৃদ্ধিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। তাদের পরামর্শে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।'