একযুগে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স; উড়ে চলেছে দেশ-বিদেশের যেসব গন্তব্যে

ইউএস-বাংলা
  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস তাদের পথচলার এক যুগে পা রেখেছে। সাফল্যের ১১ বছর অতিক্রম করে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সংস্থাটি ১২তম বছরে পদার্পণ করেছে। একাদশ বর্ষপূর্তিতে ইউএস-বাংলা তাদের সব শুভানুধ্যায়ী, যাত্রী ও অংশীদারকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা জানিয়েছে সংস্থাটি।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর রুটে যাত্রা শুরু করেছিল ইউএস-বাংলা। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির বিমানবহরে রয়েছে ২৪টি এয়ারক্রাফট, যার মধ্যে ২টি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ ও ৯টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ৯০ শতাংশের বেশি সময়মতো ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড ধরে রেখেছে সংস্থাটি।

অভ্যন্তরীণ রুটে ইউএস-বাংলা ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহীতে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আন্তর্জাতিক রুটে প্রবেশ ঘটে ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা-কাঠমান্ডু ফ্লাইট চালুর মধ্য দিয়ে। বর্তমানে কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাস্কাট, দোহা, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবি, জেদ্দা, রিয়াদ, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক এবং গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস।

খুব শিগগির ইউএস-বাংলার বিমানবহরে আরও একটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ এয়ারক্রাফট যোগ হচ্ছে। এ ছাড়া ২০২৬ সালের মধ্যে লন্ডন, রোমসহ ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্যে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে নিউইয়র্ক ও টরন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস।

সম্প্রতি ২০২৪ সালে বেস্ট ডোমেস্টিক এয়ারলাইনসে ভূষিত হয়েছে ইউএস-বাংলা। ২০২২, ২০২৩ সালেও বেস্ট ডোমেস্টিক এয়ারলাইনস পুরস্কার প্রাপ্তিতে হ্যাটট্রিক অর্জন করেছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালেও বেস্ট ডোমেস্টিক এয়ারলাইনসে সেরা পুরস্কার অর্জন করে।

যাত্রীসেবায় অনন্য নজির স্থাপন করায় ইউএস-বাংলা দেশীয় এয়ারলাইনস হিসেবে যাত্রীদের কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন ইউএস-বাংলার, যা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানেও কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বাড়িয়ে চলেছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরও সুদৃঢ়।

ইউএস-বাংলার টিকিট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপস সুবিধা। দেশে এবং দেশের বাইরে নিজস্ব ৪০টির বেশি সেলস অফিস রয়েছে। এ ছাড়া ইউএস-বাংলার টিকিট সংগ্রহ করার জন্য কয়েক হাজার ট্রাভেল এজেন্সি ও অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে ‘স্কাইস্টার’ প্রোগ্রাম।

স্বাধীনতার পর ইউএস-বাংলাই প্রথম কোনো দেশীয় বিমান সংস্থা, যা চীনের কোনো গন্তব্যে বা ভারতের চেন্নাই কিংবা মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি স্পেশাল সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে এভিয়েশন শিল্পে। উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণের পর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি। ‘আপনি লাগেজের জন্য অপেক্ষা করবেন না, বরং লাগেজ আপনার জন্য অপেক্ষা করবে’—এই ধারণা প্রতিষ্ঠা করার জন্যই ইউএস-বাংলা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।

ইউএস-বাংলা শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না, সঙ্গে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গোও পরিবহন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএস-বাংলা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ খেলাধুলার উন্নয়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িয়ে আছে।


মন্তব্য