সরকারি স্থাপনায় সোলার প্যানেল বসানোর উদ্যোগ

সোলার
  © ফাইল ছবি

সরকারি ভবনগুলোতে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’র আওতায় আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ৩ হাজার সরকারি স্থাপনায় সোলার প্যানেল বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) পরীক্ষামূলকভাবে সরকারি-বেসরকারি ৪৪৮টি ভবনে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তাব দিয়েছে।

রোববার রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে আয়োজিত ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির নকশা, বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন কাঠামো প্রস্তাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। একই সঙ্গে সিপিডি কর্মসূচির রক্ষণাবেক্ষণ নির্দেশিকা প্রণয়ন, নীতি-নির্দেশিকা প্রণয়ন, সোলার প্যানেলে কর মওকুফ, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রিন এনার্জি ফান্ডের ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদারের সুপারিশ করে।

টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) পরিচালক মুজিবুর রহমান বলেন, বাসাবাড়িতে সোলার বসানোর যে কার্যক্রম নেওয়া হয়েছিল, সেটা কোনো কাজে দেয়নি। কেননা সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। এই কর্মসূচিতে বাধ্যতামূলক রাখার প্রয়োজন আছে। চলতি বছরের মধ্যে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ অর্জন অনেক কঠিন হবে। তবে আমরা একত্রে সব জায়গায় করব না। পাইলটিংয়ের কাজ খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। আমরা চেষ্টা করব অপেক্স মডেলেই থাকতে।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘২৩ জুলাই অন্তর্বর্তী সরকার জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সরকারের জ্বালানি নীতির আওতায় এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জ্বালানি নীতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশ ও ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির উত্তরণ করা হবে। সরকারের এই উদ্যোগকে আমরা সতর্কভাবে স্বাগত জানাচ্ছি।’

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বিগত সরকারের নেওয়া ভুল নীতির কারণে জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। সংকটের ধারাবাহিকতায় এই মুহূর্তে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ যথেষ্ট কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করার সমালোচনা করে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, সম্ভবত অন্তর্বর্তী সরকার তার সময়কালের ভেতরে এই কার্যক্রমটির একটি সমাপনী দেখতে চায়। এ জন্য তাড়াহুড়ো করে একটি সমাপনী টানতে চাইছে। এটি ২০২৫-এর ডিসেম্বরে সমাপনীর বিষয় নয়। এটি দীর্ঘব্যাপী হওয়া উচিত। এত বড় কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে করলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার পুনরাবৃত্তি আবার দেখা দেবে। সরকারের ক্রয় কর্মসূচিতে ত্রুটি থাকতে পারে। ত্রুটিমুক্তভাবে কর্মসূচিটি বাস্তবায়ন করা ভালো হবে।

বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আল মাহমুদ বলেন, সোলার কর্মসূচি একটি অনেক বড় সাহসী ও উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ। এটি আগের মতো যেন নষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।


মন্তব্য