তেল পরিবহনে
নতুন অধ্যায়ের সূচনা; বছরে সাশ্রয় ২৩৬ কোটি
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২৭ AM , আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০২৫, ০৯:২৭ AM

পেট্রোলিয়াম পরিবহনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে যাচ্ছে। বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে রাজধানী ঢাকায় পাইপলাইনে পেট্রোলিয়াম সরবরাহ আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে চালু হবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, পাইপলাইনে তেল সরবরাহের কারণে বার্ষিক কমপক্ষে ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
শুক্রবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আজ থেকে পাইপলাইনে তেল সরবরাহের তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিপিসি ১৬ আগস্ট থেকে ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ তেল পাইপলাইনটি চালু করার প্রস্তুতি নিয়েছে। সেনাবাহিনীর প্রকৌশলীদের সহায়তায় প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাইপলাইনটির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পাইপলাইনটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে বিপিসি।’
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম পয়েন্ট থেকে প্রধান অতিথি হিসেবে পাইপলাইনটি উদ্বোধন করবেন।
প্রকল্পের বিবরণ অনুসারে, পেট্রোলিয়াম ট্যাঙ্কারে তেল পরিবহনের ফলে আগে লোডিং এবং আনলোডিং প্রক্রিয়ায় দু-দফা সময় ব্যয় হতো। পাইপলাইন ব্যবহারের ফলে দূষণের হারও কমবে।
এতে আরও বলা হয়, পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল পর্যন্ত ২৪১ কিলোমিটারজুড়ে ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের একটি পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। গোদনাইল থেকে ৮ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দূরে ফতুল্লায় একটি ডিপো স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে ১০ ইঞ্চি ব্যাসের একটি পৃথক পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনটি ২২টি নদী ও খালের নিচ দিয়ে গেছে।
এর আগে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইন নামে একটি পাইপলাইন ভারত থেকে বাংলাদেশে ডিজেল আমদানির জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল।
বিপিসি কর্মকর্তারা জানান, তারা এখন সমুদ্র থেকে অপরিশোধিত তেল খালাসের জন্য আরেকটি পাইপলাইন নির্মাণ করছেন।
বিপিসি কর্মকর্তাদের মতে, তেল ট্যাঙ্কারগুলো বন্দর শহর থেকে নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরে পেট্রোলিয়াম পরিবহণে অন্তত ২৪ ঘণ্টা সময় নেয়। সেখানে পাইপলাইনটি মাত্র চার ঘণ্টার মধ্যে তেল পৌঁছাতে সক্ষম।
বর্তমানে বিপিসি প্রতি বছর তেল ট্যাঙ্কারে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় তেল পরিবহনে ৩২৬ কোটি টাকা ব্যয় করে। তবে পাইপলাইনটি চালু হলে খরচ হবে ৯০ কোটি টাকা। ফলে বার্ষিক কমপক্ষে ২৩৬ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
পাইপলাইন চালুর ফলে তেল চুরিও ঠেকানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে অনেক সময় জ্বালানি তেল পরিবহনে সমস্যা দেখা দেয়। ফলে তেল সরবরাহ ব্যাহত হয়। তবে পাইপলাইন এই সমস্যার সমাধান করবে।
প্রকল্পটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে। তারা পরিবহন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের জন্য কম্পিউটারাইজড সুপারভাইজরি কন্ট্রোল অ্যান্ড ডেটা অ্যাকুইজিশন (এসসিএডিএ) সিস্টেম ইনস্টল করে এটি করেছে।
পাইপলাইনটির পরীক্ষামূলক কার্যক্রম গত ২৪ জুন অনুষ্ঠিত হয়।