এনবিআরে বরখাস্ত চলছেই
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৪ PM , আপডেট: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৪ PM
-11818.jpg)
আন্দোলনের জেরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) অস্থিরতা চলছেই। এরই ধারাবাহিকতায় আরও নয়জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সংস্থাটি। মূলত এনবিআর অধ্যাদেশ বাতিলের আন্দোলনের সময় দাপ্তরিক কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের এসব কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ নিয়ে আন্দোলনের কারণে গত দেড় মাসে এনবিআরের সদস্য থেকে প্রহরী পর্যন্ত মোট ৩১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ ৯ জনসহ মোট ৪০ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) সচিব ও এনবিআরের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খানের সই করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়েছে, বরখাস্তের পাশাপাশি এসব কর্মকর্তাদেরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে এনবিআরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের চারজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। চারজন হলেন—সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু; মোংলা কাস্টম হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার আবুল আলা মোহাম্মদ আমীমুল ইহসান খান; চট্টগ্রাম কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট ট্রেনিং একাডেমির যুগ্ম কমিশনার সানোয়ারুল কবির এবং খুলনা কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।
অপরদিকে, আয়কর বিভাগের পাঁচজন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন-আয়কর গোয়েন্দা ও তদন্ত ইউনিটের অতিরিক্ত কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা; কর অঞ্চল-৭, ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার সুলতানা হাবীব; কর অঞ্চল ফরিদপুরের যুগ্ম কর কমিশনার মো. মেসবাহ উদ্দিন খান; কর অঞ্চল দিনাজপুরের যুগ্ম কর কমিশনার মো. মামুন মিয়া; সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল (সিআইসি) পরিচালক ও যুগ্ম কর কমিশনার চাঁদ সুলতানা চৌধুরানী।
বরখাস্তের কারণ হিসেবে চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ১২ মে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারির পর এর বিরোধিতা করে এনবিআর কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট এবং আয়কর বিভাগের কর্মচারীদের কর্মসূচির সময় তারা দায়িত্বরত কর্মচারীদের দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনে বাধা দেন। এর পাশাপাশি, কাজ ত্যাগ করে রাজস্ব ভবনে আসতে বাধ্য করার মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। এই কারণে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা-৩৯ (১) অনুযায়ী, এই চার কর্মকর্তাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) নিয়োগ করে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্তকালীন তারা বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।
উল্লেখ্য, গত মে ও জুন মাসে রাজস্ব খাতে যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন করেন। ২৮ ও ২৯ জুন তারা দেশব্যাপী কাজ বন্ধ রেখেছিলেন, যা পরে ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় প্রত্যাহার করা হয়। আন্দোলনের পর থেকেই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। এ পর্যন্ত তিনজন সদস্য ও একজন কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে, এবং চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের তৎকালীন কমিশনারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এ ছাড়াও দুদক এনবিআরের ২ সদস্যসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে, যাদের অধিকাংশই আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন।