শেয়ারবাজারের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যে হাল
- বাংলাকন্ঠ রিপোর্ট:
- প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৫ PM , আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১২:১৫ PM
-12319.jpg)
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিস্থিতি মারাত্মক সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন সময়কালে ২৩টির মধ্যে ১২টি প্রতিষ্ঠান এক হাজার কোটি টাকারও বেশি লোকসানে পড়েছে। অন্যদিকে মুনাফায় থাকতে পেরেছে মাত্র ৬টি প্রতিষ্ঠান, তবে তাদের সম্মিলিত আয় ২০০ কোটি টাকাও ছুঁতে পারেনি। বাকি ৫টি প্রতিষ্ঠান এখনো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। সামগ্রিকভাবে খাতটির আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় রয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই বিপর্যয়ের মূল কারণ দীর্ঘদিন ধরে সুশাসনের অভাব, লাগামহীন অনিয়ম ও প্রভাবশালীদের প্রভাব। মালিকপক্ষ, শীর্ষ নির্বাহী, রাজনৈতিক শক্তি ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে বিপুল অর্থ লোপাট হয়েছে। এতে গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার মতো সক্ষমতা হারিয়েছে বহু প্রতিষ্ঠান। তারল্যসংকট চরমে পৌঁছেছে, ফলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে।
তাদের মতে, এখনই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ নিরীক্ষা চালানো জরুরি। আর্থিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র বের করে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলেই কেবল আস্থা ফিরতে শুরু করবে। অন্যথায় পুরো খাত ধসে পড়তে পারে।
লোকসানি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সর্বোচ্চ ক্ষতি করেছে ফনিক্স ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড—শেয়ারপ্রতি ১৫ টাকা ৮৪ পয়সা লোকসান, মোট ক্ষতির অঙ্ক ২৬২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস, যার ক্ষতি ১৮৮ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। তৃতীয় স্থানে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, লোকসান ১৪৫ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
চতুর্থ স্থানে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, যার ক্ষতি ১৩৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর পরেই রয়েছে প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, লোকসান ৫৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আরও লোকসানে থাকা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ফারইস্ট ফাইন্যান্সের ৫০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, মাইডাস ফাইন্যান্সের ৪৬ কোটি ৯১ লাখ, ফার্স্ট ফাইন্যান্সের ৪৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা, বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ৪২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির ৩১ কোটি ৪১ লাখ টাকা, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ২৭ কোটি ৬১ লাখ এবং ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের ১৫ কোটি ১ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, মুনাফায় থাকতে পেরেছে মাত্র ৬টি প্রতিষ্ঠান, যাদের সম্মিলিত আয় ১৭৬ কোটি ৫২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ লাভ করেছে আইডিএলসি ফাইন্যান্স—১০৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। দ্বিতীয় স্থানে ডিবিএইচ ফাইন্যান্স, আয় ৪১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। তৃতীয় স্থানে আইপিডিসি ফাইন্যান্স, মুনাফা ১৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এ ছাড়া ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স আয় করেছে ৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ২ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
এখনও আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি পাঁচ প্রতিষ্ঠান— জিএসপি ফাইন্যান্স কোম্পানি, ইনেভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এবং উত্তরা ফাইন্যান্স।