পাকিস্তানের চেয়ে দেশে নিত্যপণ্যের দাম বেশি

নিত্যপণ্য
  © এআই জেনারেটেড

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম কয়েক মাস পণ্যের দাম ছিল নাগালের মধ্যে। তবে বর্তমানে বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমলেও দেশের বাজারে তার কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। চাল ও ভোজ্যতেলসহ নানা পণ্যের দাম কমেনি; বরং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় বেশি দামে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের অভিযোগ, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনার নীতিমালা থাকলেও সমন্বয়ের অভাবে তা কার্যকর হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজার স্বাভাবিক রাখতে এখন দরকার শক্তিশালী ও কার্যকর নজরদারি।

বাজারে এখন বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম চড়া। এতে প্রতিদিনের কেনাকাটায় হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর বাজারে একই পণ্যের দাম তুলনামূলক অনেক কম।

চালের দাম দীর্ঘদিন ধরেই উচ্চমূল্যে স্থির। বর্তমানে ৮০ টাকার নিচে সরু চাল মিলছে না। মোটা চালের দামও ৬০ টাকার ওপরে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। ট্যারিফ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববাজারে দরপতন ও দেশে ভালো ফলন সত্ত্বেও পরিকল্পনার ঘাটতির কারণে চালের বাজারে স্বস্তি আসছে না।

একজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, “যদি সুষ্ঠু তদারকি হতো, তাহলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতো। এখন তো সবকিছুই লোক দেখানো তদারকি।”

একই চিত্র ডিমের বাজারেও। বর্তমানে প্রতি ডজন মুরগির ডিম কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকার বেশি দামে। অথচ পার্শ্ববর্তী শ্রীলঙ্কায় ডিমের ডজন ১৩৮ টাকা, পাকিস্তানে ১২৮ টাকা আর ভারতে ১১০ টাকার আশপাশে। শ্রীলঙ্কায় এক কেজি চিনির দাম ৯৭ টাকা, পাকিস্তানে ৭৭ টাকা আর ভারতে ৬৭ টাকা; অথচ দেশে তা ১২০ টাকা কেজি।

এসব দেশের তুলনায় ডাল ও ভোজ্যতেলের দামও বাংলাদেশে বেশি। বাজারে সব মৌসুমের সবজি পাওয়া গেলেও সেগুলোও নাগালের বাইরে রয়ে গেছে।

আরেকজন ক্রেতা বলেন, “সরকারের কাছে আমাদের একটাই চাওয়া—দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকুক। আমরা যেন স্বাচ্ছন্দে বাজার করতে পারি।”

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে চিনি, ভোজ্যতেল, ডালসহ বহু পণ্যের বাজার গুটিকয়েক বড় প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে। প্রতিযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিকল্প উদ্যোগ না নিলে ভোক্তারা আরও ভোগান্তিতে পড়বে।

ক্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “সরকারের সবদিক বিবেচনা করা উচিত। কেবল কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিলে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর স্বার্থ উপেক্ষিত থেকে যাবে।”

তাদের মতে, সঠিক বাজার তদারকির পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নীতি-নৈতিকতা বৃদ্ধির দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।


মন্তব্য